সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর মোটামুটি এই সময়ে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। সে দিকে লক্ষ রেখে এখন থেকেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা। গত শনিবার আলিপুরে কলকাতা পুলিশের মাসিক অপরাধ দমন বৈঠকে নগরপালের নির্দেশ, থানা, স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ, এসটিএফ— সবাইকেই স্থানীয় স্তরে প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করতে হবে। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এর আগেও বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন নগরপাল। এ বার থানা স্তরের পুলিশকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি।
লালবাজার জানিয়েছে, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতা পুলিশকে সামলাতে হবে ১৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট। এর মধ্যে ১৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের নিরাপত্তার পুরোটাই সামলাতে হবে তাদের। বাকি দু’টি— ক্যানিং (পূর্ব) এবং মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রের একটি অংশের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে কলকাতা পুলিশের হাতে।
উল্লেখ্য, গত বছর লোকসভা ভোটের আগে ভাঙড় এবং ক্যানিং (পূর্ব) এসেছিল কলকাতা পুলিশের অধীনে। গত পঞ্চায়েত এবং বিধানসভা ভোটে ওই দুই এলাকায় রাজনৈতিক হিংসা বার বার শিরোনামে এসেছে। অভিযোগ, সেই গোলমালে দেদার ব্যবহার হয়েছে বন্দুক ও বোমা। যদিও ভাঙড় কলকাতা পুলিশের অধীনে আসার পরে সেখানে ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে। পুলিশকর্তাদের ধারণা, আগামী বছরও সেই ধারা বজায় থাকবে। সেই লক্ষ্যেই নগরপাল বাহিনীকে সতর্ক করেছেন। গত বছরের লোকসভা ভোটে কলকাতা পুলিশ এলাকায় মোট বুথ ছিল ৫১৫৮টি। আর ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১৯৪০। বুথের দায়িত্ব না থাকলেও বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল কলকাতা পুলিশের উপরে।
লালবাজারের একাংশ জানাচ্ছে, ভোটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করতে বলার মাধ্যমে নগরপাল একটি প্রচ্ছন্ন বার্তাও দিতে চেয়েছেন বাহিনীকে। সেটা হল, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করে তারা কতটা সক্রিয়, তা দেখা। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন বরাবরই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। পুলিশের একটি অংশের অনুমান, আগে থেকেই পুলিশকর্মীদের এই পদক্ষেপ করার জন্য বলেছেন নগরপাল। একই সঙ্গে শনিবারের বৈঠকে আসন্ন শিবরাত্রি, দোল এবং হোলির জন্য বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।