•  পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলের লক্ষ্য প্রকৃত মানুষ গড়াই
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চাপে শহর এলাকায় অধিকাংশ সরকারি প্রাইমারিতে ক্লাসরুম প্রায় ফাঁকা। হামেশাই দেখা যায়, হাতে গোনা পড়ুয়া। কিন্তু, পাঁশকুড়া শহরে প্রতাপপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলের ছবিটা একেবারেই বিপরীত। এখানে পড়ুয়া সংখ্যা ৩০৩ জন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, প্রধান শিক্ষক থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়াররাও তাঁদের সন্তানদের এই স্কুলে ভর্তি করেন। আবার এখান থেকেই বহু পড়ুয়া ভিত শক্তপোক্ত করার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া রেজাল্ট করছে। তাঁরা সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় দারুণ রেজাল্ট করে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হচ্ছেন। ৭৪ বছর ধরে ভরসা জুগিয়ে চলছে পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর জুনিয়র বেসিক স্কুল। 


    মঙ্গলবার প্রতাপপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলে বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা ছিল। এই উপলক্ষ্যে পাঁশকুড়া পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন নন্দকুমার মিশ্র, জেলা প্রা‌ইমারি বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমান, ধুলিয়াপুর পল্লিশ্রী বাণীমন্দিরের শিক্ষক নির্মল বর্মণ সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ১৯৫১ সালে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আগামী বছর সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান পালিত হবে। মঙ্গলবার সেই অনুষ্ঠানের সূচনা হল।রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পাঁশকুড়া শহরের এই স্কুলে স্মার্ট ক্লাসের জন্য যাবতীয় উপকরণ দেওয়া হয়েছে। প্রজেক্টর মেশিনের মাধ্যমে স্মার্ট ক্লাস করানো হয়। মোট ১০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা আছেন। প্রধান শিক্ষক অচিন্ত্য খাঁড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুদে পড়ুয়াদের প্রকৃত মানুষ গড়ার অঙ্গীকার করে বিদ্যালয়ে হাজির করান। বছরের পর বছর তাঁর প্রয়াসে আস্থা রেখেছেন এখানকার অভিভাবকরা। তাই আজ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৩০৩ জন। ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত আঁকা ক্লাস, পিটি, যোগা শেখানো সহ পাঠ্যক্রমিক কাজকর্মেও ছাত্রছাত্রীদের পারদর্শী করে তোলা হয়।বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের বীণাপানি মিশ্র স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে  পুরপ্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন নন্দ মিশ্রের প্রয়াত মায়ের স্মৃতিতে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক শিক্ষিকারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শামিল হন।  প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের স্কুলে পঠনপাঠনের পাশাপাশি ছাত্রদের সার্বিক বিকাশের দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানের তৈরি ভিতের উপর দাঁড়িয়ে অনেক পড়ুয়া ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। আমরা অভিভাবকদের কাছে গিয়ে শুধু আস্থা রাখার আর্জি জানাই। তারপরের কাজটা আমরা করি। আমাদের উপর পূর্ণ ভরসা রেখে শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারি কর্মীরা তাঁদের ছেলেমেয়েকে এখানে পড়তে পাঠান। ছুটির পরও আগ্রহীদের নিয়ে ক্লাস করানো হয়। ছাত্রছাত্রীদের ভিত মজবুত করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা তা করি।
  • Link to this news (বর্তমান)