পুরুলিয়া শহরের কালভার্টের নীচে যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ
বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার গোশালা রেল গেটের অদূরে কালভার্টের নীচ থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিস। মঙ্গলবার ভোরে যুবকের দেহটি উদ্ধার হয়। মৃতদেহের মুখ ক্ষতবিক্ষত ছিল। পুলিস সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম সুরেশ সূত্রধর (২২)। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়া শহরের নডিহার নেতাজি স্কুলের কাছেই। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। পিছনে উঠে আসছে এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের কাহিনি। খুনের অভিযোগ দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে টাউন থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রের খবর, গোশালা লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে সোমবার রাতেই একটি ঝামেলার খবর পায় পুলিস। তবে, পুলিস যখন পৌঁছয় তখন সব শান্ত। ওই এলাকায় একটি বাইক দেখতে পায় পুলিস। কিছুটা দূরে এগিয়ে গিয়েই কালভার্টে নীচে একটি রক্তাক্ত দেহের সন্ধান মেলে। তবে দেহ রেল পুলিস উদ্ধার করবে নাকি টাউন থানার পুলিস উদ্ধার করবে, এনিয়ে ধন্দ তৈরি হয়। পরবর্তীতে অবশ্য টাউন থানার পুলিসই দেহ উদ্ধার করে। তবে, তখনও মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। বাইকের নম্বর প্লেট ধরে সন্ধান শুরু করে পুলিস। সেই সূত্রেই যুবকের পরিচয় জানা যায়। পুলিস সূত্রের খবর, ওই যুবক একটি বেসরকারি সংস্থায় নাইট গার্ডের কাজ করতেন। আর পাঁচটা দিনের মতো সোমবার রাতেও ওই যুবক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। যুবকের পরিবারের সবাই ভেবেছিলেন, যুবক কাজে গিয়েছেন। মৃতের বাবা স্বপন সূত্রধর বলেন, ভোরে টাউন থানার পুলিস আমাদের বাড়ি আসে। একটি মোটর সাইকেলের ছবি দেখিয়ে বলে এই গাড়িটি আপনার? আমি বলি হ্যাঁ, আমার। এরপরেই আমার ছেলের ক্ষতবিক্ষত মুখের ছবি দেখানো হয়। এরপর আমরা হাসপাতলে গিয়ে দেহ শনাক্ত করি। তাঁর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় এক মহিলা জড়িত। ওই মহিলার সঙ্গে আগেও তাঁর ছেলের গন্ডগোল হয়েছে। থানায় এনিয়ে মিমাংসা হয়েছে। সে সবের কাগজপত্রও তাঁর কাছে রয়েছে।
পরিবারে দাবি, যুবকের সঙ্গে এক বিবাহিত মহিলার সম্পর্ক ছিল। ওই মহিলা স্বামীকে ছেড়ে গোশালায় বাপের বাড়িতে থাকত। তবে, যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীনই এক তৃতীয় ব্যক্তির আগমন হয় মহিলার জীবনে। পুলিসেরও অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই খুন হতে হয়েছে যুবককে। যে জায়গায় যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই এলাকা থেকেই একটি মোবাইল ফোন, চটি, একাধিক বোতল উদ্ধার করেছে পুলিস। যুবকের পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। তদন্তের সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিসের এক পদস্থ আধিকারিক।