• রেলের উচ্ছেদ: পুনর্বাসনের দাবিতে বিক্ষোভ ব্যবসায়ী ও তৃণমূল কর্মীদের
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: আদ্রায় রেলের জায়গায় থাকা দোকানপাট তুলে নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের আগাম নোটিস দেওয়া হয়েছিল। রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তাই মঙ্গলবার রেল প্রশাসনের তরফ থেকে আদ্রায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। উচ্ছেদের কাজ শুরু হতেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন রেলের আধিকারিকরা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল এদিন উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেয়। তাতে পিছু হটে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে রেলের এই উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে ঘুম ছুটেছে প্রায় এক হাজার ব্যবসায়ীর। তাঁরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।


     রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদ্রার রেলের জায়গায় থাকা দোকানপাট সরিয়ে ফেলার জন্য ব্যবসায়ীদের নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, তারপরেও ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকান সরাননি। তাই মঙ্গলবার রেলের আধিকারিকরা আরপিএফকে সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামেন। রেলের শ্রমিকদের দিয়ে দোকানগুলি ভাঙার কাজ শুরু হয়। নিয়ে আসা হয় জেসিবি। কিন্তু, তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক ও ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে রেল পিছু হটতে বাধ্য হয়।


     আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম সুমিত নারুলা বলেন, অমৃত ভারত প্রকল্পে আদ্রা রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। তাই নর্থ সাইডের রাস্তা চওড়া হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। রাস্তার জন্য উচ্ছেদের প্রয়োজন রয়েছে। আদ্রার ব্যবসায়ীদের একাধিকবার নোটিস দেওয়া হলেও তাঁরা দোকান সরাননি। তবে আমাদের উচ্ছেদের কার্যক্রম জারি থাকবে। আমরা যাতে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতা পাই তার জন্য বিষয়টি নিয়ে জানানো হয়েছে।


     স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের তরফে ব্যবসায়ীদের দোকানগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিস করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে পুনরায় নোটিস সাঁটানো হয়। তাতে জানানো হয়েছিল, ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রেলের জায়গায় থাকা সমস্ত দোকান সরিয়ে ফেলতে হবে। তাতেই ঘুম ছোটে ব্যবসায়ীদের। ব্যবসা বন্ধ হলে তাঁরা পরিবারের মুখে কীভাবে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেবেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাই তাঁরা দোকানগুলি সরাননি। রেল পুনর্বাসন না দিলে তাঁরা দোকান সরাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে তৃণমূল। তাই এদিন রেল আধিকারিকরা উচ্ছেদ অভিযানে এলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে বেশ কয়েকটি দোকান ইতিমধ্যে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। দোকানগুলিতে রেল বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে।


    বিক্ষোভে শামিল ব্যবসায়ীদের মধ্যে মোহাম্মদ কাবির দীননাথ রায় বলেন, রেল পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক। আমাদের উচ্ছেদ করা হলে কোথায় যাব? পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই রেলের কাছে আমরা দাবি রেখেছি যাতে আমাদের কথা ভাবা হয়। তৃণমূলের তরফে রঘুনাথপুর-১ নম্বর ব্লক আইএনটিটিইউসির সভাপতি তথা আড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান তুফান রায় এদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হন। তুফানবাবু বলেন, আমরা উন্নয়নের কাজে ও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসা ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলে তারা কোথায় যাবে? রেলকে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কিছু দোকান রেলের জায়গায় রয়েছে। বাকি দোকান রাজ্য সরকারের তথা জেলা পরিষদের জায়গা। সভাধিপতি থাকার সময় রেলের ওভারব্রিজ করার জন্য আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করছে। প্রয়োজনে রেলের সঙ্গে আলোচনায় বসব। 


     আদ্রায় রেলের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)