• বধূর তিন বছরের সন্তানকে অপহরণ প্রাক্তন প্রেমিকের
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় গ্রহবধূর তিন বছরের ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল প্রাক্তন প্রেমিক। তবে পুলিসের তত্পরতায় অপহরণের ১৫ ঘণ্টার মধ্যেই ওই নাবালককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেইসঙ্গে ওই প্রাক্তন প্রেমিক ও তাঁর আত্মীয়কেও গ্রেপ্তার করেছে কেন্দা থানার পুলিস। 


    পুলিস সূত্রের খবর, কেন্দা থানা এলাকার ওই গৃহবধূর সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের চন্দনকেয়ারির হরেন গড়াই নামের যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তবে, সাংসারিক আশান্তির কারণে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান গৃহবধূ। গত আগস্ট মাস থেকে যুবকের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। এতেই কার্যত বেপরোয়া হয়ে ওঠে ওই যুবক। গৃহবধূকে বারংবার ফোন করে বিরক্ত করতে থাকে। চলে হুমকি, শাসানি। যখন দেখছে কিছুতেই কিছু কাজ হচ্ছে না, তখনই গৃহবধূর নাবালক সন্তানকে অপহরণের ছক কষে যুবক। 


    পুলিস সূত্রের খবর, সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ গৃহবধূর কেন্দার বাড়িতে এসে পৌঁছয় ওই যুবক। গৃহবধূ তখন পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিলেন। শিশুটি বাড়িতেই ছিল। ওই যুবক শিশুটিকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে পালায়। এদিনে স্নান থেকে ফিরে ছেলেকে না দেখেতে পেয়ে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন মহিলা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সেই সময়ই গৃহবধূকে ফোন করে ওই যুবক। যুবক গৃহবধূকে সাফ জানিয়ে দেয়, ‘তোমার ছেলেকে আমিই অপহরণ করেছি। ছেলেকে ফিরে পেতে চাইলে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে হবে। আমার সঙ্গে দেখা করো। না হলে একে শেষ করে দেব।’ প্রাক্তন প্রেমিকের হুমকিতে ভয় পেয়ে কেন্দা থানার দ্বারস্থ হন গৃহবধূ। । 


    অভিযোগ পাওয়া মাত্রই যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিস। বিভিন্ন সুত্র ধরে পুলিস জানতে পারে, যুবক ঝাড়খণ্ডের চন্দনকেয়ারিতে আছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (অপারেশন) যোধবর অবিনাশ ভীমরাও, মানবাজারের এসডিপিও বরুণ বৈদ্য ও কেন্দা থানার অফিসার ইন চার্জ শুভজিৎ নন্দীর নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিস। নিজেদের ‘সোর্স’ কাজে লাগিয়ে খবর পেয়ে চন্দনকেয়ারির একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিস। সেখান থেকেই তিন বছরের শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবক হরেন গড়াই ও তার জামাইবাবু সৃষ্টিধর গড়াইকে। মঙ্গলবার দু’জনকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। দু’জনেরই জেল হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক। 


    এদিকে, ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুরুলিয়া দেবেন মাহাত সদর হাসপাতলে ভর্তি করে পুলিস। পুলিসের দাবি, শিশুটির উপর শারীরিক নির্যাতন না করা হলেও সে এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্কে ছিল। মাকে কাছে না পেয়ে কান্নাকাটি করেছে। এই ধকলটা সহ্য করতে পারেনি। খবর দেওয়া হয় শিশুটির মাকেও। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করে শিশুটিকে তার মাযের হাতে তুলে দেয় পুলিস। 
  • Link to this news (বর্তমান)