পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হঠাৎ কলোনির শৌচালয় বেহাল, নদীর ধারেই শৌচকর্ম বাসিন্দাদের একাংশের
বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: কয়েক বছর আগেই বালুরঘাট পুরসভাকে উন্মুক্ত শৌচালয় হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরও নির্মল শহরে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করছেন বালুরঘাট শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হঠাৎপাড়া এলাকার একাংশ বাসিন্দা। শুধু পুরুষ নয়, রাতের অন্ধকারে মহিলারাও নদীর ধারে শৌচকর্ম করছেন। অভিযোগ, ওই এলাকায় একমাত্র কমিউনিটি শৌচালয় তৈরি করেছিল পুরসভা। সেই শৌচালয়ও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। নেই পানীয় জল, আলো। ফলে বাধ্য হয়ে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। অনেক বাড়িতে আবার কোনওরকমে শৌচালয় বানিয়ে শৌচকর্ম করছেন বাসিন্দারা। ফলে নদীতে দূষণ ছড়াচ্ছে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে স্থানীয় কাউন্সিলার ও পুরসভার কাছে শৌচালয় বানিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আজও তা মেলেনি। শুধু শৌচালয়ই নয়, পানীয় জলও পাননি বাসিন্দা। জেলাজুড়ে নির্মল বাংলার আওতায় বাড়ি বাড়ি শৌচালয় বানিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। সেখানে খোদ জেলা শহরেই এমন অবস্থাকে ‘প্রদীপের নীচেই অন্ধকার’ বলে আখ্যা দিয়েছে ওয়াকিবহাল মহল।
পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, নিচু জায়গায় কমিউনিটি শৌচালয়টি থাকায় বর্ষার সময় একটু সমস্যা হয়। শৌচালয়ের কাজের জন্য ডিপিআর করা হয়েছে। দ্রুত কাজ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি যদি ওই এলাকায় কারও শৌচালয় না থাকে, আবেদনের ভিত্তিতে তা করে দেওয়া হবে। আমরা অনেক শৌচালয় করে দিয়েছি।
এবিষয়ে ক্ষিপ্ত মহিলারা বলেন, আমাদের বাড়িতে শৌচালয় নেই। বাড়ির পাশেই এই কমিউনিটি শৌচালয়ে আমরা যেতাম। কিন্তু কয়েক মাস ধরে তা বেহাল। কখনও পাশের বাড়িতে যাই। কিন্তু রাত বিরেতে কখনও কখনও নদীর ধারেও যেতে হচ্ছে। মহিলা হিসেবে এটা আমাদের কাছে লজ্জার। শৌচালয়ের জন্য অনেক জায়গায় জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
এনিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির টাউন মণ্ডল সভাপতি সমীর প্রসাদ দত্ত। তিনি বলেন, শহরের থেকেই এই অবস্থা। মহিলাদের সম্মানের দিকটিও কেউ খেয়াল রাখে না। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলার, পুরসভাতেও তৃণমূলের বোর্ড। অথচ কেউ এলাকার মানুষের পাশে থাকে না। কাটমানি আদায় আর নিজেদের উন্নয়ন করতে ব্যস্ত।
প্রসঙ্গত, ১০ বছর আগে শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আত্রেয়ী কলোনির হঠাৎপাড়ায় জনবসতি গড়ে ওঠে। ওই এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫টি ঘর ওই এলাকায় রয়েছে। তাদের এখনও পাট্টা মেলেনি। শুধু তাই নয়, নিচু এলাকা হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষাকালে জল জমে। ওই এলাকাতে দীর্ঘদিন ধরে কারও বাড়িতেই শৌচালায় ছিল না। পুরসভা থেকে কেউ শৌচালয় পায়নি। কোনও রকমে কেউ কেউ শৌচালয় বানিয়ে ব্যবহার করছে। বালুরঘাটের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে হঠাৎ কলোনির শৌচালয় দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে।-নিজস্ব চিত্র