সরকারি জমির ‘দখল শংসাপত্র’ দিয়ে বিতর্কে পঞ্চায়েতের প্রধান
বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: প্রশাসনিক পদে থেকে সরকারি জমির দখল পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের হেটমুড়ি সিঙিঝোরা পঞ্চায়েতের অধীন তারাবান্ধার অন্তুগছে চলছে বেসরকারি উদ্যোগে আবাসন প্রকল্পের কাজ। সেই প্রকল্পে যাওয়ার পথে লচকা নদীর চরের প্রায় এক বিঘার খাস জমি রয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ওই জমির দখল পেতে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ রায় পদের অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে সরব স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত, ৩১ জানুয়ারি প্রধান জগন্নাথবাবু স্থানীয় বাসিন্দা সিপেন সিংহের নামে জমির পজেশন সার্টিফিকেট বা দখল শংসাপত্র জারি করেন। এনিয়ে প্রধান বলেন, প্লটিংয়ের জেরে রাস্তা পেতে সমস্যা ছিল। সরকারি জমিটি যাঁর দখলে ছিল, তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে জমিটির পজেশন সার্টিফিকেট দিয়েছি। আমি তো আর জমিটি ওই ব্যক্তির নামে লিখে দিইনি। জমিটি তাঁর দখলে রয়েছে, সেটাই লিখেছি।
সিপেন সিংহ বলেন, জমিটি আমার দখলে রয়েছে। বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে জমিটি আমাদের দখলে। তবে ওই জমিটি স্থানীয় কিছু যুবক ক্লাবের নাম করে দখল করতে চেয়েছিল। এরপর প্রধান মারফত জমিটি আমার দখলে নিই। সার্টিফিকেট আছে।
যদিও প্রধানের এমন কাজ নিয়ে প্রশাসনও কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে। ফাঁসিদেওয়ার বিএলআরও শুভ্রজিৎ মজুমদার বলেন, সপ্তাহ দু’য়েক ধরে ওই এলাকার লচকা নদীর চর দখলের অভিযোগ উঠেছিল। একাধিকবার তদন্ত করা হয়েছে। তাতে আমরা দেখেছি, জেগে উঠা চর নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তা নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পুলিসকে জানানো হয়েছে। তবে এরমধ্যে প্রধান ওই এলাকার খাস জমি নিয়ে একটি সার্টিফিকেট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ পেয়েছি। তবে সেই সার্টিফিকেটটি এখনও হাতে পাইনি। যদি উনি এমনটা করে থাকেন তাহলে তা তিনি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছেন। প্রধান সরকারি জমির দখল শংসাপত্র দিতে পারেন না।
একেই সুরে কথা বলেন ফাঁসিদেওয়ার বিডিও বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি বলেন, সরকারি জমি দখলের অভিযোগ পেয়ে বিএলআরও’কে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। যাতে সরকারি জমিটি সরকারের দখলে আসে। তবে প্রধান দখলদারজনিত সার্টিফিকেট কীভাবে ইস্যু করেছেন জানি না। এ নিয়ে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। বিতর্কিত জমি। পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া শংসাপত্র (পাশে)। - নিজস্ব চিত্র।