• কখনও গায়েব বেঞ্চ-ফ্যান, কখনও বইপত্র, বাসন চোরের দাপটে পড়াশোনা লাটে ওঠার জোগাড় স্কুলে
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রায় দিনই চোরের হানা স্কুলে! দরজা-জানালা ভেঙে কখনও চুরি যাচ্ছে বেঞ্চ, বইপত্র। কখনও আবার চুরি যাচ্ছে সিলিং ফ্যান থেকে মিড ডে মিলের বাসন। অবস্থা এমন হয়েছে, প্রতিদিনই স্কুলে পা দেওয়ার আগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা রীতিমতো আতঙ্কে থাকেন, না জানি আবার কী চুরি গেল! আর চোর তো বাদ রাখছে না কিছুই। ছাত্রীদের শৌচালয়ের দরজা ভেঙেও চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 


    চোরের দাপটে কার্যত পড়াশোনা লাটে ওঠার জোগাড় হয়েছে উমাগতি বিদ্যামন্দির প্রাইমারি স্কুলের। কোনও প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল নয় এটি। জলপাইগুড়ি শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই স্কুল ৯৪ বছরের পুরনো। ২০২০ সাল থেকে স্কুলে লাগাতার চুরির ঘটনায় থানা-পুলিস করতে করতে একপ্রকার অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের কথায়, গত দু’মাসে তিনবার চুরির ঘটনা ঘটল। শেষ চুরি হয়েছে গত রবিবার রাতে। সোমবার স্কুলে এসে শিক্ষক-শিক্ষিকারা দেখেন, ক্লাসরুম থেকে দু’টি বেঞ্চ উধাও। এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে চুরি হয়। পরদিন শিক্ষকরা স্কুলে এসে দেখেন, দু’টি ক্লাসরুম থেকে চারটি সিলিং ফ্যান উধাও। সঙ্গে কড়াই, বালতি নেই। দরজা ভেঙে সব হাপিস করে দেওয়া হয়েছে। 


    সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা ঘটে গত জানুয়ারি মাসে। ছাত্রীদের শৌচালয়ের কাঠের দরজা ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায় কে বা কারা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যব্রত রায় বলেন, স্কুলের সামনে বেশ উঁচু পাঁচিল রয়েছে। পিছন দিক থেকে সম্ভবত চোর ঢুকছে। প্রায়ই যদি এভাবে চুরি হতে থাকে, আর আমরা থানা-পুলিসের কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য ছোটাছুটি করতে থাকি, তাহলে পড়াব কখন? 


    প্রধান শিক্ষকের গলায় বিরক্তির সুর। বলেন, শহরের মধ্যে একটি স্কুল। অথচ ২০২০ সাল থেকে লাগাতার চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। পুলিসকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। চুরি ঠেকাতে আমরা যে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করব, টাকা কোথায়? স্কুল ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখা কিংবা পড়ুয়াদের শৌচালয় সাফাইয়ের জন্য যেটুকু প্রয়োজন, সেই অর্থও পাচ্ছি না। 
  • Link to this news (বর্তমান)