নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল ও সংবাদদাতা, মানকর: পানাগড়ে চন্দননগরের যুবতী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের রহস্যমৃত্যুতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করল সিআইডি। মঙ্গলবার সিআইডির আধিকারিকরা কাঁকসা থানায় এসে মামলা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি নেন। পাশাপাশি দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি গাড়ি খতিয়ে দেখেন। ইভটিজিংয়ের জেরেই এই ঘটনা বলে মৃতার পরিচিতরা দাবি করলেও সোমবারই পুলিস স্পষ্ট করে দিয়েছিল ইভটিজিং নয়, রেষারেষির জেরেই এই ঘটনা। এদিন তাদের কাছে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। পানাগড়ের পুরনো জিটি রোডে থাকা অন্য একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মঙ্গলবার সংগ্রহ করেছে পুলিস। সেখানে দুঘর্টনার চিত্রও দেখা যাচ্ছে। যদিও ওই সিসি ক্যামেরা ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সাদা রঙের গাড়িটিকেই মহিলার গাড়িটি পিছন থেকে ধাক্কা মেরে উল্টে যাচ্ছে।
যদিও সাদা ক্রেটা গাড়িটিতেই যদি সুতন্দ্রাদের গাড়িটি ধাক্কা মারে তাহলে গাড়িতে থাকা লোকজন চম্পট দিল কেন? ঘটনার দু’দিন পরও পুলিস তাদের হদিশ পায়নি। এদিন এসিপি সুমন জয়সওয়াল সাদা গাড়ির মালিক বাবলু যাদবের বাড়ি ও গোডাউনে যান। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি জানান, সাদা গাড়িটি চালাচ্ছিল বাবলু নিজেই। তাকে দ্রুত আমরা ধরে ফেলব।
পানাগড়ে দুর্ঘটনায় যুবতী মৃত্যুর ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। ঘটনার পরই সোমবার সকাল থেকে তাঁর সঙ্গে একটি গাড়িতে থাকা সঙ্গীরা দাবি করেন, সামনের সিটে বসে থাকা সুতন্দ্রাকে লক্ষ্য করে সাদা ক্রেটা গাড়ি থেকে ক্রমাগত কটূক্তি করা হচ্ছিল। এমনকী তাঁদের গাড়িতে একাধিকবার ধাক্কা দেওয়া হয়। বাধ্য করা হয় পানাগড় জিটি রোডে ঢুকতে। সেখানেই অন্য গাড়িটি ধাক্কা মারার পরই এই দুর্ঘটনা। কিন্তু এদিন পুলিসের পক্ষ থেকে যে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে সেখানে উল্টো চিত্র ধরা পড়েছে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল পানাগড় কাবাড়িপট্টির রাইসমিল মোড়ে। তার কিছুটা আগে থেকে সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, প্রথমে সাদা গাড়িটি যাচ্ছে। তার পিছনে দ্রুতগতিতে যাচ্ছে সুতন্দ্রাদের গাড়িটি। দূরে গিয়ে সাদা গাড়িটি ডানদিকে টার্ন নিতেই সুতন্দ্রাদের গাড়িটি তাকে ধাক্কা মারে। তারপরই উল্টে যেতেও দেখা যায়।
সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করার পাশাপাশি সাদা গাড়িতে থাকা যাত্রীদেরও খোঁজ করছে পুলিস। ঠিক কী কারণে এই রেষারেষি সেই রহস্যের কিনারা করতে বাবলুকে নাগালে পেতে মরিয়া পুলিস। জানা গিয়েছে, অবাঙালি বাবলুর উত্তরপ্রদেশে বহু আত্মীয় আছে। খুব সম্ভবত, সেই সূত্র ধরেই রাজ্য ছেড়েছে সে। এখানেই বড় প্রশ্ন, শুধুমাত্র রেষারেষির ঘটনার পরও কেন গাঢাকা দিল পানাগড় কাবাডিপট্টির ওই ব্যবসায়ী।