• গণপিটুনি-খুন কাণ্ড: কাউন্সিলার সহ ৫ দোষী সাব্যস্তের যাবজ্জীবন!
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: গান্ধীনগর এলাকার বাসিন্দা শম্ভু চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করার ঘটনায় পানিহাটি পুরসভার বর্তমান কাউন্সিলার তারক গুহ সহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাকপুর তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত। মঙ্গলবার বিচারক অয়ন কুমার ব্যানার্জি রায় ঘোষণার সময় বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৯, ৩০২ এবং ৩২৫ ধারায় পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এটি বিরলতম ঘটনা নয়। কিন্তু নৃশংস ঘটনা। তাই পাঁচজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। দণ্ডিতদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার পর শাসকদলের কাউন্সিলার সহ দণ্ডিতরা ভেঙে পড়েন। প্রসঙ্গত, গত ২০১৪ সালের দুর্গাপুজো পর্বে ২৫ সেপ্টেম্বর পানিহাটিতে ওই গণপিটুনির ঘটনাটি ঘটে। মৃত্যু হয়েছে ৪০ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির।  


    এদিনের সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পানিহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার তারক গুহ ছাড়া বাকিরা হলেন তাঁর ভাইপো নেপাল গুহ, জয়দেব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল দাস ও হরিপদ সরকার। নেপাল তৃণমূলের পশ্চিম পানিহাটি উদ্বাস্তু সেলের সভাপতি এবং যুব তৃণমূলের পদাধিকারী। তারকবাবু ঘটনার সময় কাউন্সিলার ছিলেন না। তিনি ওয়ার্ড সভাপতি এবং কলোনি কমিটির নেতা ছিলেন। ওই সময় ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান স্বপন ঘোষ। তিনি মারা যাবার পর ২০২২ সালে তারকবাবু কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। 


    এই রায় ঘোষণার অনেক আগে পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলার ও কর্মী-সমর্থকরা আদালত চত্বরে চলে আসেন। ভিড় সামাল দিতে র‍্যাফ মোতায়েন করা হয়।  উপস্থিত সবাই ভিড় জমান আদালত কক্ষে। পরে বিচারক এসে পরিবারের লোকজন ছাড়া বাকি সবাইকে বাইরে যেতে বলেন। রায় ঘোষণার পরে পশ্চিম পানিহাটি তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রবীর ভট্টাচার্য আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, দল তারক গুহদের পাশে আছে। রায়ের কপি হাতে পেলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দণ্ডিতদের পরিবারের লোকজন। তাঁদের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ওই ঘটনার পরে তারক গুহ জখম শম্ভুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়িতেও পৌঁছে দিয়েছিলেন। পরে অসুস্থ হয়ে শম্ভুর মৃত্যু হয়। এটা অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হতে পারত। 


    আদালতের রায়ে খুশি নিহত শম্ভুর স্ত্রী জ্যোৎস্না চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আমি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ। ১১ বছর ধরে এই রায়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার স্বামীকে সেদিন খুন করা হয়েছিল। আজকের রায় আমার স্বামীর গা থেকে সে মিথ্যা অপবাদ মুছিয়ে দিল। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)