• ম্যানগ্রোভ ও বাঘের টানে ক্রমেই সুন্দরবনে ভিড় বাড়ছে ভিয়েতনাম-স্পেন-জার্মানির পর্যটকদের
    বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ জঙ্গল দেখতে কেমন? সেখানকার বাসিন্দারা কিভাবে বসবাস করেন? কি তাঁদের জীবিকা? সুন্দরবনে বাঘে-মানুষের সহাবস্থান কেমন করে সম্ভব হচ্ছে? এই বিষয়গুলি নিয়ে গোটা বিশ্বেরই আগ্রহ। তা জানতেই এই সিজনে ভিয়েতনাম, স্পেন, জার্মানি ইত্যাদি দেশ থেকে এসে সুন্দরবনে ভিড় জমালেন পর্যটকরা। ২০২৩-’২৪ সালের তুলনায় ২০২৪-’২৫ সালের ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বিদেশি পর্যটক সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে বক্তব্য সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের। তাদের হিসেব অনুযায়ী, ’২৩-’২৪ সালে ৭৫৬ বিদেশি পর্যটক সুন্দরবন ঘুরেছিলেন। ’২৪-’২৫ সালে সে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫১। সঙ্গে এদেশের পর্যটকদের আকর্ষণও এবার বেড়েছে বলে দাবি ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকদের।


    সুন্দরবন ঘুরিয়ে দেখার দায়িত্ব মূলত গাইডদের উপর থাকে। তাঁদের বক্তব্য, বিদেশি পর্যটকরা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট দেখে অবাক হয়ে যান। বাদাবন সংক্রান্ত খবরাখবর এতদিন ম্যাগাজিনে বা ইন্টারনেটে পড়েছেন তাঁরা। এবার এখানে এসে সেসব কতটা সত্যি তা গাইডদের মুখ থেকে জানতে চান। তাঁদের সবথেকে বেশি আকর্ষণ, বাঘে-মানুষে লড়াইয়ের বিষয়ে। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে মানুষ কিভাবে বসবাস করছেন, প্রাণে বাঁচছেন, জীবিকা নির্বাহ করছেন সে গল্প শুনে বিস্মিত হয়ে পড়েন পর্যটকরা। রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে চান বারবার। কিন্তু দেখতে না পেলেও মুখ গোমড়া করেন না। ওয়াটার সাফারি করে হাসিমুখেই দেশে ফেরেন। প্রকল্প আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এবার ভিয়েতনাম, স্পেন বা জার্মানির মতো দেশের পর্যটক বেশি দেখা গিয়েছে। তাছাড়া আমেরিকা ও ইংল্যান্ড থেকেও প্রতিবছরই অনেকে আসছেন। কেউ দু’দিন থাকছেন। কেউ তিনদিন। বেশিরভাগই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আসেন। টাইগার রিজার্ভের তথ্য মোতাবেক, এ বছর জানুয়ারি মাসে ৪৬১ বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। আর দেশের পর্যটক সংখ্যা ৯১ হাজারেরও বেশি। ডিসেম্বরের তুলনায় তা অনেকটাই বেড়েছে। আধিকারিকরা জানান, সুন্দরবনের টানে এখন অনেক পর্যটক আসছেন। ক্রমশ ভিড় বাড়ছে বিদেশিদের। এ প্রবণতা সুন্দরবনের অর্থনীতি ও পর্যটন ব্যবসার উন্নতি ঘটাবে।


    এর পাশাপাশি ট্যুর অপারেটরদের বক্তব্য, বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে খুব বেশি সমস্যা হয় না। তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু কিছু বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। এমনিতেই অন্যান্য পর্যটকদের জন্য প্যাকেজে কাঁকড়া, মাটন, চিকেন থাকে। তেল, মশলা দিয়েই রান্না হয়। কিন্তু বিদেশিদের অনেকে তেল, মশলা খান না। তাই তাদের রান্না হয় আলাদাভাবে। কাঁকড়াও অনেকে খান না বলে মেনুর বদল হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)