ভূতুড়ে ভোটার! দিল্লি মডেল বাংলার স্পিকারের কেন্দ্রেও
বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদাতা, বারুইপুর: ভূতুড়ে ভোটারের খোঁজ মিলল এবার রাজ্য বিধানসভার স্পিকারের কেন্দ্রেও! চম্পাহাটির পর নতুন করে আলোচনার ভরকেন্দ্র এখন বারুইপুর পশ্চিম বিধানসভা। এখানকার ১০টি পঞ্চায়েত ও বারুইপুর পুর এলাকায় ৪ হাজার ভুয়ো ভোটার রয়েছে বলে দাবি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থাৎ, আবারও কি বাংলায় ‘দিল্লি মডেল’-এর ছায়া? এ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। এই ভূতুড়ে ভোটার কারা? তাঁদের ঠিকানা কোথায়? এসব নিয়ে বুথস্তরে স্ক্রুটিনি শুরু করেছে জোড়াফুল শিবির।
এমনিতেই চম্পাহাটি পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্ক কিছু ছাড়ছে না। সেখানে বিভিন্ন বুথে গত লোকসভা ভোটে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছিলেন, এমন প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ চলে গিয়েছে এবারের তালিকা থেকে। বিভিন্ন বুথ থেকে এহেন বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, এই পঞ্চায়েতের ২২টি গ্রাম সংসদ রয়েছে। সেখানকার প্রতি বুথ থেকে কমপক্ষে ২৫টি নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রচুর মৃত ভোটারের নাম এখনও রয়ে গিয়েছে ভোটার তালিকায়। অভিযোগ, সেগুলি বাদ দেওয়া হয়নি এখনও। কয়েকদিন আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার কাজ করেছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য থেকে অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। তারপরই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ সরদার কিংবা নেপাল দাসের মতো অনেকেই এখন ফাঁপরে পড়েছেন। কারণ, গত বছর জুন মাসে ভোট দিলেও নয়া তালিকায় তাঁদের নাম নেই। ভোটাররা বলছেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিলাম, আর এখন নামের পাশে লেখা রয়েছে ডিলিটেড! কী করে এটা সম্ভব, জানি না!’
এরই মধ্যে ভুয়ো ভোটার বাতিলের দাবি নিয়ে মঙ্গলবার বারুইপুরের এসডিও এবং বিডিও’র কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন অধ্যক্ষ ও যাদবপুর লোকসভার সাংসদ সায়নী ঘোষ। বিমানবাবুর অভিযোগ, ‘অনেক ভোটারের নাম বাইরে থেকে ঢোকানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকাতেই নেই, এমন অনেকের নাম ভোটার তালিকায় আছে। এছাড়াও অনেকের নাম আছে, তাঁদের অস্তিত্বই নেই পঞ্চায়েত ও পুর এলাকায়। এতে প্রকৃত ভোটাররা বাদ পড়ে যাচ্ছেন। এটা বিজেপির কারচুপি।’ জোড়াফুল শিবির মনে করছে, এভাবেই প্রকৃত ভোটারদের বাদ দিয়ে ‘বহিরাগত অনুপ্রবেশ’ ঘটেছে তালিকায়। অন্যদিকে, পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে প্রায় ৬০০ ভুয়ো ভোটার রয়েছে বলে জানতে পেরেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে এই ঘটনার জন্য সরকারি আধিকারিকদেরও দায়ী করেছেন স্পিকার। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এই ঘটনায় ব্লকের কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে। তবে এসডিও দায় এড়াতে পারেন না। এই বিষয়ে এসডিও চিত্রদীপ সেনের প্রতিক্রিয়া জানতে বেশ কয়েকবার ফোন এবং মেসেজ পাঠানো হলেও, সাড়া মেলেনি।