প্রতারণার শিকার অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, খোয়া গেল ৫২ লক্ষ টাকা
বর্তমান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হলেন দমদমের বৃদ্ধ দম্পতি। অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর থেকে দু’মাস ধরে দফায় দফায় মোট ৫২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। ওই দম্পতি ভয়ে দু’মাসের বেশি সময় কার্যত গৃহবন্দি হয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে আত্মীয়রা বিষয়টি জানার পর তাঁদের সঙ্গে দমদম থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন দম্পতি। পুলিস জানায়, চলতি মাসের ২২তারিখ অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদম থানার আর বি সি রোডের বাসিন্দা রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রথীন্দ্রনাথবাবুর ফোনে অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। টেলিকম অথরিটির নাম করে বলা হয়, আর্থিক তছরুপের একটি মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সিবিআই তদন্ত করছে। ওই মামলায় তাঁদের যোগ পাওয়া গিয়েছে। নরেশ গোয়েল নামে একজনের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই মিলেছে তাঁদের যোগসূত্র। তাই ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হচ্ছে তাঁদের। এরপর আদালতের ভুয়ো একটি নির্দেশনামা পাঠিয়ে ৫২ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে বলা হয়, এটি সুপ্রিম কোর্টের সাসপেনশন অ্যাকাউন্ট। সেখানেই টাকা পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, তাদের এই কথা কাউকে জানাতে নিষেধ করা হয়। মোবাইল ফোনের ক্যামেরা সবসময় অন করে রাখতে বলা হয়েছিল। এসব কারণে তীব্র ভয় ঘিরে ধরে দম্পতিকে। গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে তাঁরা প্রতারকদের কথামতো চলতে বাধ্য হন। মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ছ’দফায় মোট ৫২ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেন। তারপর প্রতারকরা ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ তুলে নেওয়ার কথা বলে। এই ঘটনার পর আরও প্রায় ১৫ দিন আতঙ্কে গৃহবন্দি ছিলেন দম্পতি।
রথীন্দ্রবাবুর স্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতারকরা মোবাইলের ক্যামেরা অন রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরনো একপ্রকার বন্ধ রাখতে হয়। সর্বদা নজর রাখত। ওরা বলত, আমাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্যই এমন নজরদারি।’ অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিস অসহযোগিতা করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে পুলিস জানিয়েছে, ২২ তারিখই অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করে ব্যাঙ্ককে জানানো হয়েছে। অন্যান্য নথিপত্র পাওয়ার পর মামলা রুজু করা হয়েছে। টাকা উদ্ধারের সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।