বরাবরই চা শ্রমিকদের পাশে থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরের বন্ধ চা বাগান খোলার জন্য সদিচ্ছা দেখিয়েছেন বারবার। এবার উত্তরের চা শিল্পকে চাঙ্গা করতে মুখ্যমন্ত্রী বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এই পদক্ষেপে একদিকে যেমন চা শ্রমিকদের কথা মাথায় রাখা হয়েছে, অন্যদিকে বাগান মালিকদের সুবিধের কথাও ভোলেননি তিনি। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ৩ বছরের জন্য ৬টি ধুঁকতে থাকা চা বাগান লিজে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকদের ঠিকমতো মাইনে দিতে কোনও সমস্যা হবে না মালিকদের। একই সঙ্গে চা পর্যটনে জোয়ার আনতে এবং কর্মসংস্থান গড়ে তোলার জন্য জোরাল পদক্ষেপ করেছেন মমতা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উত্তরের ৬টি ধুঁকতে থাকা চা বাগান লিজে দেওয়া হচ্ছে। এই বাগানগুলির কর্মীদের দীর্ঘদিন ধরে বেতন অমিল ছিল। বাগানগুলি ৩ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হচ্ছে। যাতে মালিকরা ভালোভাবে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারে। যদি তাঁরা সফলভাবে চালাতে পারেন, কর্মীদের বেতন দিতে পারেন, ঠিকমতো প্রভিডেন্ট ফান্ড-গ্র্যাচুইটি দিতে পারেন তাহলে বাগানগুলি ৩০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হবে।
কয়েকদিন ধরেই চা বাগানের জমি আইনে বদল ঘটানো হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এ নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে বলে, ‘কিছু ভূতুড়ে দল মিথ্যে প্রচার করছে। চা বাগানে জমি আইনে কোনও বদল আনা হচ্ছে না। কোনও চা বাগানে যদি উদ্বৃত্ত জমি থাকে তবে সেই জমিতেই বাণিজ্যিক কাজকর্ম করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।’ একসঙ্গে ৩০ একর জমি কাউকে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, চা বাগানের যেখানে চা চাষ হয় না। চা পর্যটনে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সেই জমির ১৫ শতাংশ অংশে বাণিজ্যিক কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যদি দেখা যায়, চা বাগান ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ স্থানীয়দের চাকরি দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের ঠিকমতো বেতন দেওয়া হচ্ছে, প্রভিডেন্ট ফান্ড-গ্র্যাচুইটি সব ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে তবে তাঁদের আবেদন জমা পড়বে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর কাছে। একটা এসওপি তৈরি করা হয়েছে। তার সঙ্গে সব মাপকাঠি মিলে গেলে তবে অতিরিক্ত জমিতে বাণিজ্যিক কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হবে। সঙ্গে একইসঙ্গে সতর্কবার্তাও দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে রেখেছেন, যদি দেখা যায় চা বাগান বন্ধ করে বাণিজ্যিক কাজ চলছে, তাহলে কর্মাশিয়াল কাজ বন্ধ করে দিয়ে সেই জমি ফিরিয়ে নেওয়া হবে।