• কুমোরটুলি কাণ্ডে মা-মেয়ে ছাড়াও তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি? ভ্যান চালকের বয়ানে চাঞ্চল্যকর তথ্য
    এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • মধ্যমগ্রাম খুনে কি মা-মেয়ে ছাড়াও জড়িত আরও কেউ? ভ্যান চালকের বয়ানে তৈরি হয়েছে এমনই ধন্দ। মধ্যমগ্রামের বীরেশ পল্লি এলাকা থেকে পিসিশাশুড়ির মৃতদেহ ট্রলিব্যাগে পুরে কুমোরটুলিতে হাজির হয়েছিলেন মা ও মেয়ে। বাড়ি থেকে মধ্যমগ্রামের দোলতলা পর্যন্ত ভ্যান ভাড়া করে ট্রলি নিয়ে যান অভিযুক্ত আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষ। সেই ভ্যানচালক রাধানাথ হালদারের বয়ানেই উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য।

    মধ্যমগ্রামের বীরেশ পল্লি এলাকার পরিচিত ভ্যানচালক রাধানাথ হালদার। কাঁচাপাকা চুলের এই ব্যক্তির মঙ্গলবার ভোরের ভাড়া বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন। ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া ট্রলিতে যে মানুষের কাটা লাশ ছিল তা ভাবতেই শিউড়ে উঠছেন তিনি। রাধানাথ হালদারের বয়ান এই মামলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সে দিন ভোরে এক ভদ্রলোক তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন আরতি ও ফাল্গুনীর কাছে। পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়েছিল দুই মহিলা। তার পর তারা ভ্যানচালককে নিজেদের সঙ্গে বাড়ি নিয়ে যায় ও বলে ভিতরে একটি ট্রলি আছে। সেটি আনতে হবে। চালকের দেওয়া এই তথ্যে প্রশ্ন জাগছে তৃতীয় ওই ব্যক্তি কে? যিনি রাধানাথ হালদারকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।

    ভ্যানচালক রাধানাথ জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে তিনি আগে কখনও এলাকায় দেখেননি। চালককে ডাক দিয়েই সেখান থেকে চলে যান বলে দাবি। এই ব্যক্তির উপস্থিতির বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা বলে খবর।

    অন্যদিকে, ভ্যানচালক রাধানাথ জানিয়েছেন, দুই মহিলা মিলে বাড়ি থেকে টেনে ওই ব্যাগ বার করতে পারছিলেন না তাই তিনি সাহায্য করেছিলেন। বীরেশ পল্লি থেকে দোলতলা নিয়ে গিয়ে আরতি ও ফাল্গুনীকে তিনি নামিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন। তারপর তারা কোথায় যান আর তিনি দেখেননি। দুপুর পর্যন্ত তিনি বুঝতেও পারেননি ভ্যানে করে কী নিয়ে গিয়েছেন। পরে দুপুরের পর থানায় ডাক পেয়ে গিয়ে যা শুনলেন তাতে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ।

    ভ্যানচালকের দাবি,ভারি ব্যাগ সত্ত্বেও তাঁর কোনওরকম সন্দেহ হয়নি। ট্রলিতে কোনও রক্তের দাগ তিনি দেখতে পাননি। দুর্গন্ধও পাননি। কিন্তু এই ঘটনার পর ৬০ বছর বয়সি রাধানাথ বলছেন, ‘জীবনে বড় শিক্ষা হল। কোনও যাত্রীর কথাতেই আর ভারি ব্যাগে হাত দেব না।’

    রাধানাথের ভ্যান ছেড়ে একটি ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন আরতি ও ফাল্গুনী। পরে ওই ট্যাক্সি থেকে নেমে গঙ্গায় ট্রলি ফেলতে গিয়েই ধরা পড়েন তারা। বাড়িতে সুমিতা ঘোষকে খুন করার পর লাশ ট্রলিতে করে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্ত মা-মেয়ে। সেই মতোই ভোরে বাড়ি থেকে ট্রলি নিয়ে রওনা দেন তারা। কিন্তু ভ্যান ডাকেন কে? তিনিও কি কোনও ভাবে এই ঘটনায় যুক্ত? এই ঘটনাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

    প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রাত বাড়লেই ওই বাড়িতে অচেনা লোকজন আনাগোনা করত। আগত অতিথির কেউ কি ভ্যান চালককে ডাকতে গিয়েছিলেন? তাহলে কি এই তৃতীয় ব্যক্তি খুনের সময় উপস্থিত ছিলেন? খুনের ঘটনা সামনে আসার পর এক পড়শি তো বলেই ফেলেন, তাঁর সন্দেহ ওই বাড়িতে মধুচক্র চলত। কিন্তু, গত দু’দিনে কেউ এসেছিল কী না সেটা কারও নজরে পড়েনি।

  • Link to this news (এই সময়)