কৌশিক দে ■ মালদা
মালদা মেডিক্যাল কলেজে একসঙ্গে চার কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন ১৮ বছরের এক তরুণী। যদিও ওজন কম হওয়ায় অপুষ্টিজনিত রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কারণ, মাত্র সাড়ে ১৬ বছর বয়সে ওই তরুণীর বিয়ে হয়েছিল বলে তাঁর স্বামী চিকিৎসকদের জানিয়েছেন। বিষয়টি সামনে আসতেই জেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রশাসনের দাবি, দুর্গম কোনও এলাকায় হয়তো বিক্ষিপ্তভাবে বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু গত এক দশকে বাল্যবিবাহের পরিসংখ্যান ৪৪ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে জেলায়। এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হচ্ছে।
মালদা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজোল ব্লকের বাসিন্দা ওই তরুণী ভর্তির সময়ে পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড জমা দেন। সেখানে তাঁর বয়স ১৮ বছর বলে উল্লেখ করা ছিল। তরুণীর স্বামী পেশায় দিনমজুর। তিনি দিল্লিতে কাজ করেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গত মাসে ফিরে এসেছেন গ্রামে।
গত শুক্রবার তরুণীকে ভর্তি করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগে। সোমবার রাতে ওই তরুণী চার কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তিন সদ্যোজাতের ওজন ১ কিলো ৫০০ গ্রাম। অন্যজনের ওজন ১ কিলো। ফলে এই চার সদ্যোজাতের অপুষ্টি জনিত কারণে শারীরিক সমস্যা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার ওই তরুণীর স্বামী জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীর যখন সাড়ে ১৬ বছর বয়স, তখনই সম্বন্ধ করে বাড়ির লোকেরা বিয়ে দেন। স্ত্রী এবং সন্তানেরা যাতে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারে, সেই আশাতে রয়েছেন তিনি।
মালদা মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ প্রসেনজিৎ কুমার বর বলেন, ‘ওই তরুণী সফলভাবে চার কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। চিকিৎসকরা তাঁদের সাধ্যমত চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’ পাঁচটি ব্লকে এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা প্রশাসনের নজরে এসেছে।
এদিকে, যে এলাকায় বাসিন্দা ওই তরুণী, সেই গাজোলের বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, ‘বাল্যবিবাহের বিষয়টি প্রশাসন দেখছে। সংশ্লিষ্ট ব্লকের অনেক দুর্গম এলাকা রয়েছে। সেখান থেকে ঠিক সময়ে বাল্য বিবাহের খবর পাওয়া যায় না। গোপনে বেশ কিছু পরিবার অল্প বয়সে বাড়ির মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। এর সঙ্গে পাচারের একটা চক্রও জড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের লক্ষ্য, বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা।’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘বর্তমানে জেলায় বাল্যবিবাহ ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ এক দশক আগে ৪৪ শতাংশ ছিল। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে অনেক ক্ষেত্রে সেটা জানতে পারছি। এক্ষেত্রে ওই পরিবারগুলির কাছে গিয়ে সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত দম্পতিদের বাচ্চা না নেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। কারণ, অল্প বয়সে বিয়ে আর মা হতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।’ উল্লেখ্য, জেলার রতুয়া (২), হরিশ্চন্দ্রপুর (২), গাজোল সহ চার থেকে