এই সময়, বোলপুর: প্রসূতি–মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃত প্রসূতির পরিবারের লোকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গড়লেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বোলপুরের মুলুক গ্রামের বাসিন্দা ওই প্রসূতির নাম ফেন্সি ঘোষ (২৮)। তাঁর স্বামী অচিন্ত্য ঘোষ জানান, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ফেন্সিকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকেরা নর্মাল ডেলিভারির কথা বলেন। সেই মতো ফেন্সিকে লেবার রুমে পাঠানো হয়। কিন্তু গভীর রাতে প্রসবের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে শুরু করে।
প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে ওই অবস্থাতেই দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে লেবার রুমে অবহেলায় ফেলে রাখা হয় ফেন্সিকে। নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন স্বজনরা। তাঁদের দাবি, লেবার রুমের কর্তব্যরত এক নার্স একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর থেকেই ফেন্সির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে শুরু করে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মৃতার পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযুক্ত নার্সদের শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। প্রসূতির পরিবার হাসপাতালে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায়।
মৃতার স্বামী অচিন্ত্য ঘোষের কথায়, ‘চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে পর্যবেক্ষণে রাখার কথা ছিল। অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নার্স ও চিকিৎসকের শাস্তি চাই।’
ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও। এ প্রসঙ্গে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দীপঙ্কর সর্দার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ওই সময়ে কর্তব্যরত নার্স বা চিকিৎসকদের যদি কোনও রকম গাফিলতি ধরা পড়ে, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় চার জনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’