এই সময়, বসিরহাট: বেসরকারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারের সেমিনারে যোগ দিতে এসে এক গৃহবধূর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়। মৃতার স্বামীর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী–কে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। কোচিং সেন্টারের এক প্রশিক্ষক ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট থানার দণ্ডিরহাট এলাকায় একটি বেসরকারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারের ঘরে।
তদন্তে নেমে বসিরহাট থানার পুলিশ ওই কোচিং সেন্টারের প্রশিক্ষক আজাহারউদ্দিন মোল্লা ওরফে নীরব–কে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতকে মঙ্গলবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতের ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গা থানা এলাকার এক তরুণী গৃহবধূ এলাকার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। মাঝেমধ্যে বসিরহাট দণ্ডিরহাট এলাকার এক বন্ধুর সূত্র ধরে একটি বেসরকারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে সেমিনারে যোগ দিতেন।
সোমবার রাতে ওই সেন্টারের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় সেই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করে কোচিং সেন্টারের কর্মী। কিন্তু বিষয়টি মানতে চাননি মৃতার স্বামী। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী–কে গণধর্ষণ করে খুন করেছে বেসরকারী নার্সিং কোচিং সেন্টারের কর্মীরাই। মাসখানেক আগে এই নার্সিং কোচিং সেন্টার খোলা হয়। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে তালাবন্ধ অবস্থায় থাকা ওই কেন্দ্র দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। খবর যায় পুলিশের কাছে। পরে বসিরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ট্রেনিং সেন্টারের মূল দরজা ভাঙার পরে এক মহিলাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়।
মৃতার স্বামী দাবি করেন, ‘সোমবার সকালে স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় জানায়, কোচিং সেন্টারের সেমিনারে অংশ নিতে যাচ্ছে। বিকালেও ওর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছিল। স্ত্রী তখন বলেছিল, কাজ সেরে কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে ফিরে আসবে। সন্ধ্যার পরেও ও বাড়িতে না ফেরায় আমি বার বার মোবাইলে ফোন করি। তা বেজে গেলেও কেউ ধরেনি। রাতে এক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ফোন ধরে জানায় স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে স্ত্রী–র মরদেহ দেখতে পান। মৃতার স্বামী বলেছেন, ‘ফোন পাওয়ার পরেই আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে ওর নীথর দেহ দেখতে পাই। আমার সন্দেহ, স্ত্রী–কে গণধর্ষণ করে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়ে পরে নাটক করা হচ্ছে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি। ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ পুলিশ এ দিন দেহটি ময়না–তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।