• খুল যা সিম সিম, যত কাণ্ড ফিঙ্গারপ্রিন্টে
    এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, জলপাইগুড়ি: সিম কিনতে গেলে থাম্ব ইম্প্রেশনে জালিয়াতি করে একজনের নামে একাধিক সিম তুলে নেওয়া নতুন কোনও ঘটনা নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটলেও জলপাইগুড়িতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। মোট ১৭২টি সিমকার্ড সম্পর্কে এমন অভিযোগ ওঠার পরে তদন্তে নেমে পুলিশ গত কয়েকদিনে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে মঙ্গলবার পাকড়াও করা হয়েছে দু’জনকে।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির সিমকার্ড জালিয়াতির ঘটনায় কেবল দিল্লিতে নয়, মহারাষ্ট্র, এমনকী উত্তরপ্রদেশেও এই ঘটনার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলকে (সিট) ওইসব রাজ্যে তদন্তের জন্য পাঠানো হবে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার খন্ডবাহালে উমেশ গনপত। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, এই ধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করতে সিমকার্ড ব্যবসায়ীদের সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

    জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দোপাধ্যায় জানান, সিমকাণ্ডে ধৃত দু’জনকে আদালতে তোলা হলে বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবার ক্রাইম কো–অর্ডিনেশন সেন্টার থেকে জেলার মোট ১৭২টি সিম নিয়ে অভিযোগ আসে। সেই তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ সোমবার ৩৫টি প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম বাজেয়াপ্ত করে। এই ঘটনার তদন্তে অর্ণব দত্ত, নরেন্দ্র ঠাকুর এবং সুনীল প্রসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর মঙ্গলবার দীপায়ন মণ্ডল ও মহম্মদ মমিন নামে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা মালবাজারের বাসিন্দা। পুলিশ একটি সিমকার্ডের দোকানও সিল করে দিয়েছে। কী ভাবে কোন সোর্সে এই সমস্ত সিমকার্ড কলকাতায় বা অন্য রাজ্যে পাঠানো হতো তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

    পুলিশ সূত্রের খবর, সাউথ ইস্ট দিল্লির সাইবার পুলিশ স্টেশনে রুপেশ কুমার ঠাকুর নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ জানান, তাঁর সঙ্গে ১৬ হাজার টাকার আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মালবাজারের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা নামে এক মহিলার নাম করে রুপেশের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়। তবে এখনও সেই প্রিয়াঙ্কার খোঁজ পায়নি পুলিশ।এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘মালবাজার, নাগরাকাটা, কোতোয়ালি, মেটেলি, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি থানায় এখনও পর্যন্ত ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন এই চক্রের জাল জলপাইগুডি়তে বেশ কিছুদিন ধরেই সক্রিয়।

    ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, কাস্টমারের পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে একাধিক সিমকার্ড সক্রিয় করে অতিরিক্ত সিমকার্ড নিজেদের কাছেই রেখে দিতো দোকানদারেরা। পরে ওই কার্ড ঘুরপথে বাইরের রাজ্যে চলে যেত। কোন পথ ধরে সিমকার্ড বাইরে যেত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

  • Link to this news (এই সময়)