• দুর্গন্ধ আটকাতে ছড়ানো হয়েছিল সুগন্ধি, আর কী কী করেছিল মা ও মেয়ে, পুলিশের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য...
    আজকাল | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যমগ্রাম খুন কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল পুলিশ হাতে। তদন্তে জানা গিয়েছে, সুমিতা ঘোষের দেহ সরাতে রেইকি করেছিল আরতি ঘোষ (মা) ও ফাল্গুনী ঘোষ (মেয়ে)। মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ আটকাতে ট্রলি ব্যাগে ছড়ানো হয়েছিল সুগন্ধিও। পুলিশের দাবি, সম্পত্তির ভাগ নিতেই মা ও মেয়ে মিলে রীতিমতো পরিকল্পনা করে সুমিতাকে খুন করেছে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সুমিতার বাড়ি অসমে। বর্ধমানের নাদনঘাটে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সুমিতা বাপের বাড়ি ফিরে যান। সুমিতা নিঃসন্তান ছিলেন। ব্যাঙ্কে তাঁর বিপুল টাকা সঞ্চিত রয়েছে। রয়েছে প্রচুর সোনাদানাও। পুলিশের দাবি, সুমিতার সেই সম্পত্তিতে ভাগ বসাতেই আরতি ও ফাল্গুনী তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করে। দিন কয়েক আগে মা ও মেয়ে সুমিতাকে তাঁদের বাড়িতে ডেকে আনেন। রবিবার বিকেলে তাঁরা সুমিতাকে খুন করেন। খুনের পর দেহ সরাতে মা ও মেয়ে রীতিমতো রেইকি করেন। কোন পথে, কীভাবে দেহ সরানো হবে তা নিয়ে মা ও মেয়ে রাস্তায় বেশ কয়েকবার মহড়া দেন। রবিবার বিকেল থেকে সুমিতার দেহ একটি ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। সোমবার বিকেলে কলকাতার বৌবাজার থেকে তাঁরা বড় একটি ট্রলি ব্যাগ কিনে আনেন। ইতিমধ্যে দেহে পচন ধরে যায়। দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। সেই দুর্গন্ধ রোধ করার জন্য বাড়ির চারপাশে সুগন্ধি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবার রাতভর মা ও মেয়ে মিলে সুমিতার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন। তারপর তা প্লাস্টিকে মুড়ে ট্রলি ব্যাগের ভিতরে ভরে ফেলেন। দুর্গন্ধ আটকাতে ট্রলি ব্যাগের ভিতরেও সুগন্ধি ছড়ানো হয়েছিল। 

    মঙ্গলবার সকালে কুমোরটুলি গঙ্গার ঘাট থেকে আরতি এবং ফাল্গুনীকে ট্রলি ব্যাগ-সহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে ট্রলি ব্যাগ থেকে এক মহিলার মুন্ডু কাটা দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সুমিতা ঘোষ। সম্পর্কে তিনি ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি। আরতি ও ফাল্গুনী উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বীরেশপল্লিতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে ধৃত ফাল্গুনীকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার উত্তর বন্দর থানা ও মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ বীরেশপল্লিতে আসে। কীভাবে সুমিতাকে খুন করা হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সময় যত গড়িয়েছে ট্রলি ব্যাগ-কাণ্ডে পুলিশের হাতে ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। কলকাতা পুলিশের উত্তর বন্দর থানার আধিকারিকরা মঙ্গলবার রাতভর মা ও মেয়েকে জেরা করেছেন। মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশও তদন্ত প্রক্রিয়ায় কলকাতা পুলিশকে তথ্য সরবরাহ করছে।
  • Link to this news (আজকাল)