• নিজেও খেয়েছেন, অন্যদেরও দেদার খাইয়েছেন? অয়ন শীলের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর দাবি ED-র!
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • 'ফেলো কড়ি, মাখো তেল!' কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট -এর দাবি, এই ফর্মুলাতেই নাকি কোটি কোটি টাকা কামিয়েছিলেন পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত অয়ন শীল।

    এই মামলায় একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। তাতে দাবি করা হয়েছে, অযোগ্য প্রার্থীদের বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম করে ৪০ কোটি টাকা ঘরে তুলেছিলেন অয়ন শীল।

    তবে, সেই সব টাকা তিনি একা 'হজম' করেননি। 'ভাগ বাঁটোয়ারা' করেই নাকি সেরেছিলেন 'খাওয়া-দাওয়া'! সেটা কেমন? ইডি-এর চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, অসাধু উপায়ে যে ৪০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন, তার মধ্যে ৩০ কোটি টাকাই তিনি বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারপার্সন, পুর-আধিকারিক এবং বেশ কিছু প্রভাবশালীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

    ইডি-এর আরও দাবি, তাদের কাছে জেরায় চাঞ্চল্যকর এক দাবি করেছেন অয়ন শীল। তিনি গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিতে কতজনকে পিছন দরজা দিয়ে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হবে, এবং তার ফলে কার কতটা লক্ষ্মীলাভ হবে, এই সমস্ত বিষয়ে পুর-কাউন্সিলরদের নিজস্ব কোটা ছিল।

    ইডি-এর ওই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে পেশ করা তথ্য অনুসারে, এইভাবেই প্রায় ১,২০০ জন অযোগ্য ব্যক্তিকে বিভিন্ন পুরসভায় চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে পুরসভাগুলিতে কাজ পেয়েছেন, সেই তালিকায় রয়েছে - কামারহাটি, টিটাগড়, বরানগর, দক্ষিণ দমদম ও মধ্যমগ্রাম।

    বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অয়ন শীল এক-একজন অযোগ্য প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন বলে দাবি করেছেন ইডি আধিকারিকরা। বছরের পর বছর ধরে এই দুর্নীতি চলেছে এবং তার ফলে অয়ন অন্তত ৪০ কোটি টাকা রোজগার করেছেন। যার চারভাগের তিনভাগই তিনি এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অন্যদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

    শুধু তাই নয়। অযোগ্যরা যাতে যোগ্যদের ছাপিয়ে গিয়ে চাকরি পেতে পারেন, তার জন্য দেদারভাবে ওএমআর শিট জালিয়াতি করা হয়েছে।

    এক্ষেত্রে দেবেশ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তিরও নাম উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অভিযোগ, এই দেবেশকে ভায়া করেই নাকি অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন অয়ন শীল। একবার টাকা হাতে পৌঁছে গেলেই অয়নের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের কাছে নির্দেশ যেত, তাঁরা যেন পরীক্ষায় ফাঁকা ওএমআর শিট জমা দেন!

    পরবর্তীতে অয়ন শীলের অফিসে এই সমস্ত ফাঁকা ওএমআর শিট পূরণ করা হত। অবশ্যই সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর লেখা হত সেখানে। ফলত, অযোগ্য প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের থেকে অনেক বেশি নম্বর পেতেন এবং চাকরিও তাঁদের হাতেই আসত।

    'টাইমস অফ ইন্ডিয়া'-এ এই সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দাবি করা হয়েছে, ইডি-এর এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট নিয়ে আপাতত কিছু বলতে রাজি হননি অয়ন শীলের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ। তাঁর বক্তব্য, 'আমরা এখনও পর্যন্ত ওই চার্জশিট পুরোপুরি খতিয়ে দেখিনি।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)