ট্রলি ব্যাগে পিস পিস করে কেটে রাখা আত্মীয়ার লাশ। ট্যাক্সির ডিকিতে দেহ ভরা সুটকেস তুলে বিন্দাশই ছিলেন মা ও মেয়ে। অভিযুক্ত আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষকে দেখে ট্যাক্সি চালক ভাবতেই পারেননি যে তাঁরা মানুষ খুনের মতো কোনও ভয়ঙ্কর কাজ করে এসেছেন। ট্যাক্সি চালক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘৪০ বছর ধরে ট্যাক্সি চালাচ্ছি। ওদের দেখে কিছু বুঝতেই পারিনি।’
ট্যাক্সি চালকের বয়ানেই স্পষ্ট রীতিমতো টেনশন ফ্রি, বিন্দাস মুডেই ছিলেন সুমিতা ঘোষ খুনে অভিযুক্ত মা ও মেয়ে। বাড়ি ফিরে ডাল, আলুভাজা আর কী কী রান্না করা যায় সেই পরিকল্পনা করছিলেন। লাশ ফেলতে গিয়ে যে কোনও গন্ডগোল হতে পারে তা নিয়ে কোনও আশঙ্কাই ছিল না আরতি আর ফাল্গুনীর। ট্রলি ব্যাগ গঙ্গায় ফেলে দিব্যি মধ্যমগ্রাম ফিরে আসবেন এমনটাই ছিল পরিকল্পনা। তাদের দিলখোলা আলোচনা শুনে একবারও মনে হয়নি তাদের মনে কোনও ভয় বা অনুশোচনা কাজ করছে।
ট্যাক্সি চালক শ্যামসুন্দর দাস জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে দোলতলা থেকে দুই মহিলা তাঁর গাড়িতে ওঠেন। তারা জানিয়েছিলেন কুমোরটুলি ঘাটে যাবেন। দরাদরির পর ৬০০ টাকায় নিয়ে যেতে রাজি হন চালক। তিনি জানিয়েছেন, দুই মহিলার সঙ্গে ছিল একটি ভারি ট্রলি ব্যাগ। এতটাই ভারি যে তারা একা তুলে ডিকিতে রাখতে পারছিলেন না। এত ভারি সুটকেস তুলতে সাহায্য করতে গিয়ে ট্যাক্সি চালক প্রশ্নও করেন কী আছে এতে। জবাবে আরতি ও ফাল্গুনী জানিয়েছিলেন, ট্রলিতে কাঁসার বাসন, জামাকাপড়, খাবার রয়েছে।
ট্যাক্সি চালকের বয়ান শুনে তদন্তকারীদের অনুমান, দুই অভিযুক্ত একেবারে স্বাভাবিক ছিলেন। চালকের যাতে কোনও সন্দেহ না হয় তাই অন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন অভিযুক্তরা বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তবে শ্যামসুন্দর দাস বলছেন, ‘এ বার যা অভিজ্ঞতা হল, এরপর থেকে যাত্রীর বড়-ভারী ট্রলি ব্যাগ দেখলে অবশ্যই ভয় লাগবে।’