• গর্ভগৃহে ডুবন্ত শিবলিঙ্গ থেকে ভেসে ওঠে বুদবুদ, বেলদার এই মন্দিরের ইতিহাস জানেন?
    এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • গ্রামের নাম কেদার। গ্রামের সুপ্রাচীন জলাশয়ের ধারেই আছে এই শিব মন্দির। পুকুরে জল না থাকলেও, মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকা ‘শিবলিঙ্গ’ সারা বছরই জলে ডুবে থাকে। সেখান থেকেই কিছুক্ষণ অন্তর ওঠে জলের বুদবুদ। এই ‘বুদবুদ’-কে গ্রাম্য ভাষায় বলে ‘ভুড়ভুড়ি’। মহাশিবরাত্রির দিন সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে এই মন্দির প্রাঙ্গণে।

    পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেদার গ্রামের শিব মন্দির তাই ‘কেদার ভুড়ভুড়ি’ হিসেবেই পরিচিত। বেলদা থানার অধীন খাকুড়দা বাজারের কাছেই এই ‘কেদার ভুড়ভুড়ি’-র মন্দির। শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দির সম্পর্কে নানা লোককথা শোনা যায়। বুধবার মহাশিবরাত্রির দিন সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের ভিড় মন্দির প্রাঙ্গণে। বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকেও মহিলারা এসেছেন শিবের মাথায় জল ঢালতে। মন্দির চত্বরে নিরাপত্তার খামতি রাখেনি পুলিশ।

    কথিত আছে, পূর্বকালের তুর্কাচৌর পরগণার খণ্ডরুইগড়ের জমিদার ‘সিংহ গজেন্দ্র মহাপাত্র’ বংশের গোশালা ছিল এই কেদার এলাকায়। সেখানেই একটি শিবলিঙ্গ পেয়ে মন্দির গড়ে বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জমিদার। অবিভক্ত মেদিনীপুরের সুপরিচিত মন্দির-গবেষক ও লেখক চিন্ময় দাস তাঁর জীর্ণ মন্দিরের জার্নালে উল্লেখ করেছেন এই মন্দিরের কথা। 

    তিনি লিখেছেন, ‘মন্দির লাগোয়া অংশে কুণ্ডপুকুর নামে একটি জলাশয় আছে। পূর্বকালে নিয়মিত বুদবুদ উঠত জলাশয়টির বায়ুকোণে। সেই কারণেই এটি কেদার ভুড়ভুড়ি নামে পরিচিত ছিল।’ তবে, বর্তমানে পুকুরটিতে প্রায়শই জল থাকে না। গর্ভগৃহের গম্ভীরার সঙ্গে যোগ ছিল এই পুকুরের। সেই গম্ভীরার জল শুকোয় না কোনওদিন। সেই জলের ভিতরেই শিবের লিঙ্গবিগ্রহটি অবস্থিত। শিবরাত্রি এবং গাজনের সময় ভক্তদের ঢল নামে। প্রতি সোমবারও আচার-অনুষ্ঠান মেনে পুজো-অর্চনা হয় বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্য পিনাকী বর্মন।

  • Link to this news (এই সময়)