আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার কলকাতায় দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। বৈঠক ডেকেছেন খোদ দলনেত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সুদূর মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার মধ্যে প্রত্যন্ত ব্লক থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরিবহন মাধ্যমও সীমিত। সময়মতো পৌঁছতে সময়মতো ধরতে হবে ট্রেন। কিন্তু চোখের সামনে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, কলকাতা যাওয়ার নির্ধারিত সময়ের ট্রেন 'মিস' করে গুরুতর আহত ৫ জন ব্যক্তির প্রাণ বাঁচালেন ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। যদিও বহু চেষ্টা সত্ত্বেও একজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বুধবার বিকেল নাগাদ মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বল্লালপুর সংলগ্ন ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ধুলিয়ানের দিক থেকে ফরাক্কা দিকে যাচ্ছিল বিধায়কের গাড়ি। নিজের গাড়ির সামনের আসনে বসে হঠাৎই তিনি দেখতে পান তার গাড়ির কিছুটা দূরে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় একটি বাচ্চা মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে ধুলিয়ানের দিক থেকে যাওয়া একটি অটো ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়।
জাতীয় সড়কের আশেপাশে সেই সময় খুব কম লোকজন থাকার ফলে উল্টে যাওয়া অটোর যাত্রীদের এবং তার চালককে উদ্ধার, বাঁচানোর জন্য ছিলেন না কেউ। তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন 'চিকিৎসার ক্ষেত্রে 'গোল্ডেন আওয়ার' বলে একটি শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি সমস্ত কাজ বাতিল করে দুর্ঘটনায় আহতদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই।‘
সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে তার কিছুক্ষনের মধ্যে বাড়ি ফিরে কলকাতা যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল বিধায়কের। সময় মতো ট্রেন না ধরলে তাঁর পক্ষে আগামীকালের মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার এক প্রকার অসম্ভব। কিন্তু ওই মুহূর্তে টড়েন ধরার অসম্ভব জেনেও অটোচালক এবং দুর্ঘটনায় আহত দুই মহিলা দুই পুরুষ এবং এক শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিজের গাড়িতে বসিয়ে নেন বিধায়ক। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের ভর্তি করান।
ওই হাসপাতালের বর্ষিয়ান এক চিকিৎসক জানান, বিধায়ক দ্রুততার সঙ্গে আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ফলে তাদের সকলের চিকিৎসা সময়মতো শুরু করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আশা করছি সকলকে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফেরাতে পারব।
মনিরুল বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন মানুষের সঙ্গে থেকে,পাশে থেকে তাদের সেবা করার জন্য। চোখের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটতে দেখে আমার মনে হয়েছিল-কলকাতা পৌঁছনোর তাড়া থাকলেও তাঁদের রাস্তায় ফেলে রাখা উচিত নয়। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা উচিত । সেই কারণে আমি ট্রেন ধরার থেকে, আগে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি মনে করেছি ।' তবে এই প্রতিবেদন লেখার আগে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল আহতদের ভর্তি করানোর পর বিধায়ক নিজের উদ্যোগে আগামীকালের সভায় যোগ দেওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন।