কানে হেডফোন লাগিয়ে কথা বলতে বলতে রেল লাইন পেরোতে গিয়ে সোদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হলো দুই মহিলার। তাঁরা মা-মেয়ে বলে স্থানীয়রা দাবি করলেও বুধবার রাত পর্যন্ত রেলের তরফে তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। এ দিন রাতে সোদপুর স্টেশনের ১ নম্বর লাইন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তাঁরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রেললাইনের উপর দিয়েই তাঁরা চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাচ্ছিলেন। স্টেশনে ওভারব্রিজ রয়েছে। তা ব্যবহার না-করে এ ভাবে বহু মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন টপকে যাতায়াত করেন।
স্টেশনে থাকা অন্য যাত্রীরা জানিয়েছেন, ওই দুই মহিলা চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাওয়ার সময়ে দূরন্ত গতিতে তিন নম্বর লাইনে এসে পড়ে হাটেবাজারে এক্সপ্রেস। কানে হেডফোন থাকায় ট্রেন আসার শব্দ আগে থেকে ওই দুই মহিলার কানে পৌঁছয়নি বলেই মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। শেষ মূহূর্তে তাঁরাও নিজেদের বাঁচানোর সুযোগ পাননি। প্রচন্ড গতিতে আসা হাটেবাজারে এক্সপ্রেস তাঁদের সজোরে ধাক্কা মারে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেই ধাক্কার অভিঘাত এমনই ছিল যে দুই মহিলার একজন ছিটকে অন্তত ৪০০ মিটার দূরে পড়েন। সূত্রের খবর। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। অন্য মহিলা ট্রেনের সামনের কাউক্যাচারে আটকে যান। শিউরে চোখ বন্ধ করে ফেলেন স্টেশনে থাকা অনেকে। অভিযোগ, এক মহিলা কাউক্যাচারে আটকে থাকা অবস্থাতেই ট্রেনটি সোদপুর থেকে নৈহাটি স্টেশন পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে যায়। সোদপুর থেকে নৈহাটির দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। মাঝে আটটি স্টেশন পড়ে।
মাঝরাত পর্যন্ত ট্রেনটি নৈহাটি স্টেশনেই আটকে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
হাটেবাজারে এক্সপ্রেস ট্রেন বলে সব স্টেশনে থামে না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও প্রশ্ন উঠেছে, সোদপুর স্টেশনে ওই দুই মহিলাকে কি দেখতে পাননি চালক? ট্রেনের কাউক্যাচারে একজন মহিলা আটকে থাকলেও তাঁকে নিয়ে কী করে আটটি স্টেশন পেরিয়ে গেলেন তিনি? ওই দূরত্ব অতিক্রম করতে কমপক্ষে ২৬ মিনিট সময় লাগার কথা। প্রশ্ন উঠেছে, সোদপুরের দুর্ঘটনার পরে স্টেশন মাস্টারের কাছে সে খবর কতক্ষণে পৌঁছেছিল? সেই খবর পরের স্টেশনে কেন পৌঁছয়নি? কেন থামানো হয়নি কাউক্যাচারে মহিলাকে নিয়ে ছুটতে থাকা ট্রেনকে?