• ৪ দিন আগে প্রাক্তন স্বামীর খোঁজে নাদনঘাটের পেট্রল পাম্পে সুমিতা
    বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: খুন হওয়ার আতঙ্কেই কি দীর্ঘ আট বছর পর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিলেন সুমিতা? এখন সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পুলিস মহলে। খুন হওয়ার চারদিন আগে তিনি নাদনঘাটের কালীতলায় শ্বশুড়রবাড়িতে এসেছিলেন। সেদিন তিনি প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের সঙ্গে দেখা করার জন্য মরিয়া ছিলেন। কিন্তু, তিনি ওই দিন বাড়িতে ছিলেন না। সুমিতা জানতে পারেন স্থানীয় একটি পেট্রলপাম্পে সুদীপ্ত রয়েছেন। তিনি সেখানেও যান। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাননি। কয়েক ঘন্টা এলাকায় অপেক্ষা করার পর তিনি আবার শিয়ালদহ ফিরে যান। 


    পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর আর কোনও যোগাযোগ তাঁদের মধ্যে ছিল না। কিন্তু আচমকা দেড় মাস আগে থেকে সুমিতা সুদীপ্তর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। অচেনা নম্বর থেকে ফোন করেন সুদীপ্তকে। প্রথমবার ফোন রিসিভ করেন। বিশেষ কথা হয়নি। সুমিতার পরিচয় দিতেই ফোন কেটে দন। তারপর ওই নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু সুদীপ্ত তোলেননি। অবশেষে তিনি নাদনঘাটে এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর আমি সম্পর্ক রাখতে চাইনি। ও কোথায় থাকত, কি করত, তা জানতাম না। তবে খুনের ঘটনা জানার পর খারাপ লাগছে।’ 


    সুদীপ্তর এক পরিচিত বলেন, ‘সুমিতার বাপেরবাড়ি যথেষ্ট বিত্তবান। তাঁরা অসমের বাসিন্দা। তবে, বহুদিন আগে কলকাতায় চলে আসেন। বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি দিদির বাড়িতে থাকতেন। খুন হওয়ার চারদিন আগে সুমিতা হঠাৎ করেই আমার নাদনঘাটের বাড়িতে চলে আসেন। ওঁকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি সেই সময় জানিয়েছিলেন, একা থাকতে ভাল লাগছে না। তাছাড়া সুদীপ্তও ভাল নেই। তাই তিনি আবার সম্পর্ক করতে চান। সেদিন তিনি সুদীপ্তকে কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন। ওই দিন তাঁকে দেখে মনে হয়েছিল আতঙ্কে রয়েছেন। খুব কথা বলছিলেন। গম্ভীর হয়েছিলেন। সুদীপ্তর সঙ্গে দেখা হলে তিনি হয়তো কিছু বলতেন। তিনি আসার আগে এক ব্যক্তি হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করেন। তিনি সুমিতার প্রাক্তন স্বামীকে বুঝিয়ে আবার সংসার করানোর জন্য পরামর্শ দেন।’ 


    জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ২০১১ সাল থেকে স্বামী এং স্ত্রীর সম্পর্কের ফাটল চওড়া হয়। ২০১৭ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার আট বছর পর স্বামীর কাছে ফিরতে চাওয়ার পিছনে নিশ্চয় কোনও কারণ ছিল। তিনি হয়তো আগে থেকেই পরিণতি আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। সেই কারণেই হয়তো তিনি স্বামীর আশ্রয়ে আসতে চেয়েছিলেন। নাদনঘাটে ফিরতে পারলে তিনি অনেকটাই নিরাপদে থাকবেন, সেটা ভেবেই হয়তো তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন।  


    প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষ।-নিজস্ব চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)