সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বিষ্ণুপুরে ডিজিটাল অ্যারেস্টে প্রতারণার ঘটনায় ধৃত সাতজনের মধ্যে পাঁচজনই বিজেপি শাসিত রাজ্যের। তার মধ্যে তিনজন গুজরাতের এবং দু’জন ওড়িশার বাসিন্দা। এছাড়াও বাকি দু’জনের বাড়ি তেলেঙ্গানা ও কেরলে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ জানুয়ারি বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মচারীকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে ১০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। ওই ঘটনায় পুলিস তদন্তে নেমে আগেই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। বুধবার আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিন ধৃতদের নাম কুলু পুটেল, অভিষিক্ত মেহের এবং মহম্মদ আসিফ। প্রথম দু’জনের বাড়ি ওড়িশার সুবর্ণপুর জেলায়। শেষের জনের বাড়ি কেরলের কোজিকোদিতে।
বুধবার বিষ্ণুপুর থানায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার(অপারেশন) মকসুদ হাসান বলেন, ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে আর্থিক প্রতারণার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজন ধরা পড়েছে। তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা সংগঠিত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। একটি চক্র বানিয়ে তারা এই কাজ করছে। বিষ্ণুপুরের ঘটনায় আগেই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এদিন আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে এদিন দু’জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি একজনকে কেরল থেকে বিষ্ণুপুরে আনা হচ্ছে। বিষ্ণুপুরের প্রতারিত ব্যক্তির টাকা প্রথম ওড়িশার কুলুর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। এদিন ধৃতদের মধ্যে সেও রয়েছে। প্রত্যেককে জেরা করে চক্রের মাথা পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অপরাধ চক্রের মাস্টার মাইন্ডরা নকল থানা তৈরি এবং নকল পুলিস সেজে ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করছে। মূল পান্ডারা প্রতারিত অর্থ নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকায় না। তারা অর্থের লোভ দেখিয়ে অনেক বেকার যুবককে নিযুক্ত করেছে। তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে। প্রথম একটি অ্যাকাউন্টে ঢোকানো টাকা কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্যের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হচ্ছে। মূলত বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে তারা লেনদেন করছে। বিষ্ণুপুরের মতো একইভাবে কিছুদিন আগে বাঁকুড়ার হীড়বাঁধ থানা এলাকার এক শিক্ষককে একইভাবে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে ১০লক্ষ ২৯হাজার টাকা প্রতারণা করেছে। তিনি ইতিমধ্যে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিস ওই ঘটনারও তদন্ত করছে। তবে বিষ্ণুপুরে প্রতারণার ঘটনায় পুলিস বড় সাফল্য পেয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজনকে ধরা গিয়েছে। তাদের মধ্যে আগে ধৃত চারজন বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছে। এদিন ধৃত তিনজনকে পুলিস হেফাজতে নেওয়া হবে। তাদের জেরা করে চক্রের মাথাকে ধরা হবে। ধৃতদের নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক পুলিসের। -নিজস্ব চিত্র