সংবাদদাতা, তেহট্ট: ১০৬ বছরের পঞ্চমুখী শিব পুজো হয়ে আসছে তেহট্টের ভট্টাচার্য বাড়িতে। এই বছর প্রথম এই বাড়িতে তিন ফুটের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা হল। ন’জন ব্রাহ্মণ পুজো পাঠের মাধ্যমে এই শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন। পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, ১০৬ বছর আগে শরৎচন্দ্র ভট্টাচার্যের সেজ ছেলে অবনীমোহন ভট্টাচার্য বাড়িতে পঞ্চমুখী শিব তৈরি করেন। সেই থেকে এই বাড়িতে শিবপুজো শুরু হয়। ওই সময় পুজো হয় বাড়ির মেজ ছেলে শ্যামাপদ ভট্টাচার্যের হাতে লেখা পুঁথি পড়ে। আর পুজো করেন বাড়ির বড় ছেলে রামরঞ্জন ভট্টাচার্য। এখনও সেই হাতে লেখা পুঁথি পড়েই তাঁদের বংশধররা পুজো করে আসছেন। একই ভাবে শিবমূর্তিও বংশ পরম্পরায় তৈরি হচ্ছে। এই শিবের পাঁচটি মুখ। যা খুব বেশি দেখা যায় না। অনেকে এই পুজোয় মানসিক করেন। আগে বেলগাছের নীচে মাটির বেদিতে পুজো হতো। কিন্তু বাড়ির বড় ও মেজ ছেলে মারা যাওয়ার পর ওই বেলগাছ মরে যায়। পরে ওই জায়গায় নতুন একটি বেলগাছ লাগানো হয়। এখন সেই জায়গায় মন্দির তৈরি হয়েছে।
এবছর রাজস্থান থেকে শিবলিঙ্গ নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করা হল। এবিষয়ে বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম প্রলয় ভট্টাচার্য বলেন, মহাদেবের পাঁচটি মুখ পাঁচটি বিশেষ মৌলিক উপাদানকে নির্দিষ্ট করে। যেমন আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও ক্ষিতি। জাগতিক যা কিছু সজীব তাই এই পঞ্চ মৌলিক উপাদান দিয়ে তৈরি। মহাদেব একাধারে সৃষ্টি কর্তা আবার তিনি প্রলয় কর্তা। তাঁর পাঁচটি মহাকর্ম হল সৃষ্টি, স্থিতি, লয়, অনুগ্রহ ও তিরোভাব। আমাদের পূর্বপুরুষ এই পুজো শুরু করেছিলেন। আজও একই নিয়মে পুজো হয়ে আসছে। আর এদিন শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করার মূল কারণ আমাদের পরের প্রজন্ম যেখানেই থাকুক এই দিনে গ্রামের বাড়িতে এসে পুজো করবে।