• জংলিবাবা মন্দিরে পুজো দিতে এসে বাইসন, চিতাবাঘ ও গজরাজ দর্শন
    বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বাগডোগরা: গভীর বনের মাঝে মন্দির। ফলে বুনোর দর্শন পাওয়ার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে। তাই বলে একেবারে ‘ত্রিমূর্তি’! বুধবার বাগডোগরার জংলিবাবার মন্দিরে শিবরাত্রির পুজো দিতে যাওয়ার পথে একই সঙ্গে হাতি, চিতাবাঘ আর বাইসনের দেখা পেলেন পুণার্থীরা। যদিও সেগুলি ছিল নিরাপদ দূরত্বেই। তবে ভোলেবাবার পুজো দিতে এসে এভাবে বন্যজন্তুর দেখা পেয়ে খুশিই ভক্তরা।


    এদিন সকালে বাগডোগরার জঙ্গল থেকে রাস্তায় চলে আসে একটি বাইসন। কিছুক্ষণ পরই তিনটি চিতাবাঘ রাস্তায় উঠে পড়ে। এদিকে, জংলিবাবা মন্দির থেকে ৩০০ মিটার দূরত্বে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিল ১২টি হাতির একটি দল। বাগডোগরার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে গা-ছমছম পরিবেশে এদিন শিবের মাথায় জল-দুধ-ঘি ঢাললেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। আর তাঁদের নিরাপত্তা দিতে কড়া প্রহরায় বনকর্মীরা। 


    সকাল ১০টা থেকেই ভক্তদের ভিড় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জংলিবাবা মন্দিরে। পুণ্যার্থীদের মন্দিরে পৌঁছে দিতে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছিল বনদপ্তর ও সেনাবাহিনী। নিঃশুল্ক অটো, টোটো ছিল। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে যাতে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যায়, তারজন্য ছিল অ্যাম্বুলেন্সও। পুণ্যার্থীদের জন্য ছিল প্রসাদের আয়োজন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ছিল পুলিস। 


    সকালে পাহাড়গুমিয়া চা বাগানের ১৪ নম্বর সেকশন থেকে অটল চা বাগানে চলে আসে একটি বাইসন। পরে সেটিকে এশিয়ান হাইওয়ে-২ পার করে বাগডোগরার জঙ্গলে ফিরিয়ে দেন বনকর্মীরা। বাগডোগরার জঙ্গলে এখন পাঁচটি বাইসন আছে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর। বাইসন চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মন্দিরের রাস্তায় হঠাৎ তিনটি চিতাবাঘ বেরিয়ে আসে। এ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকায় থাকা পুণ্যার্থীরা। যদিও বনকর্মীরা চিতাবাঘ তিনটিকে তৎপরতার সঙ্গে জঙ্গলে ফেরান। এছাড়াও হাজার হাজার শিবভক্ত যখন মন্দিরে পুজো দিতে ব্যস্ত, সেসময় মন্দির থেকে ৩০০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ছিল একপাল হাতি। সব মিলিয়ে এবারে শিবরাত্রির পুজোয় ভক্তদের নিরাপত্তা দিতে কার্যত কালঘাম ছোটে বনকর্মীদের। 


    বনদপ্তরের বাগডোগরার রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, কার্শিয়াং ডিভিশনের বাগডোগরা, ঘোষপুকুর, টুকরিয়াঝার ও পানিঘাটা রেঞ্জ মিলিয়ে ১০টি টিম কাজ করছে। পুণ্যার্থীদের সুরক্ষায় সবরকম পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। একটি বাইসন, তিনটি চিতাবাঘ, ১২টি হাতির পাল বিভিন্ন সময়ে বেরিয়ে এসেছিল। তবে কোনও সমস্যা হয়নি। মন্দির ছাড়া পুণ্যার্থীদের জঙ্গলের আর কোথাও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)