নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ভিড় বাজারে একটু অসতর্ক হলেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে মোবাইল! তা সে দিনবাজার হোক কিংবা স্টেশন বাজার বা পান্ডাপাড়া বউবাজার। সর্বত্রই একই ঘটনা ঘটছে। ‘বাজার করতে গিয়ে মোবাইল হারিয়েছে’, এই বয়ানে অভিযোগ জমা দেওয়ার যেন ‘হিড়িক’ পড়েছে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায়। রোজ কমবেশি পাঁচ-ছ’টা মোবাইল হারানোর অভিযোগ জমা পড়ছে। অনেকে আবার মোবাইল কেনার কাগজপত্র হাতের কাছে না থাকায় সেটি খোয়া যাওয়ার পর পুলিসে অভিযোগ জানাতে পারছেন না। কিন্তু কেন শহরের বাজারগুলি থেকে এত মোবাইল খোয়া যাচ্ছে? তাহলে কি এর নেপথ্যে কোনও নয়া গ্যাং? ক্রমেই দৃঢ় হচ্ছে সেই সন্দেহ। নজরদারিতে সাদা পোশাকে বাজারগুলিতে টহল দিচ্ছে পুলিস। কিন্তু তারপরও মোবাইল চুরির ঘটনা কমছে না বলে অভিযোগ।
এনিয়ে কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, আমরা আমাদের মতো করে নজরদারি চালাচ্ছি। কিন্তু লোকজনের অসতর্কতা কোনও অংশে কম নেই। জামার বুক পকেটে মোবাইল রেখে বাজার করতে গিয়ে কোথায় মোবাইল পড়ে যাচ্ছে, তার হুঁশ থাকছে না তাঁদের। এই অসতর্কতার সুযোগ নিয়েই একের পর এক মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটছে। পরে থানায় এসে মোবাইল হারানোর ডায়েরি করছেন তাঁরা।
বুধবার দুপুরে দিনবাজারে শিবরাত্রির পুজোর বাজার করতে গিয়ে মোবাইল খুইয়েছেন রানিনগরের বাসিন্দা সুমন্ত মণ্ডল নামে এক যুবক। দু’মাস আগে মোবাইল কিনেছিলেন তিনি। এদিন থানায় অভিযোগ জানাতে এসে বলেন, ভিড়ের মধ্যে শিবরাত্রির পুজোর বাজার করছিলাম। জামার পকেটে মোবাইল ছিল। চোখের নিমেষে দেখি, মোবাইল হাপিস।
একইভাবে পান্ডাপাড়া বউবাজারে শিবরাত্রির পুজোর বাজার করতে গিয়ে মোবাইল খোয়া গিয়েছে বিজনবিহারী সাহার। এদিন তিনিও কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। বললেন, কয়েক মিনিটের ঘটনা। এর মধ্যে দেখি, জামার পকেট থেকে মোবাইল নেই।
মঙ্গলবার মেয়ের বিয়ের বাজার করতে এসে দিনবাজারে মোবাইল খোয়ান শহরের ওল্ড পুলিস লাইন এলাকার এক মহিলা। তাঁর ক্যাধে ঝোলানো ব্যাগে ছিল মোবাইল। সেই ব্যাগের চেন খুলে মোবাইল তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওই মহিলার। থানার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দেন। বলেন, আর কয়েকদিন পরই বাড়িতে বিয়ে। সমস্ত নম্বর ওই ফোনে। এখন কী হবে জানি না। পুলিসে অভিযোগ জানিয়েছি। কচুয়া নন্দনপুর এলাকাতেও মঙ্গলবার রাতে একটি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
পুলিস সূত্রে খবর, বাজার এলাকায় ঘুরে বেড়ানো কিছু মহিলাকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। এদের কারও কারও কোলে শিশু থাকছে। সুযোগ বুঝে এরা মোবাইল চুরি করছে। এছাড়া নেশার টাকা জোগাড়ে মোবাইল হাতানোর ঘটনাও ঘটতে পারে, এমন সন্দেহজনকদের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে।