সংবাদদাতা, পতিরাম: রাতের অন্ধকারে সদ্যোজাতকে শাড়ি দিয়ে মুড়িয়ে ডোবায় ফেলে দিয়ে গিয়েছিল কেউ বা কারা। ওই শিশুকে টেনে ডাঙায় নিয়ে আসে কুকুর বা শেয়াল। বুধবার সকালে বিষয়টি নজরে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পতিরাম থানার বটুন গ্রামে। খবর পেয়ে পতিরাম থানার পুলিস সদ্যোজাতর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ বলেন, কতদিনের শিশু এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বটুন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সুকান্ত দাস বলেন, রাতের অন্ধকারে কেউ এনে ডোবায় ফেলে দিয়েছে। পরে কুকুর কিংবা শেয়াল ডোবা থেকে টেনে ডাঙায় তুলেছে বলে মনে হচ্ছে। কে এই ধরনের কাজ করল তা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিসকে ঘটনার তদন্তের জন্য জানিয়েছি। আশাকরি দ্রুত অপরাধীরা ধরা পড়বে।
এক গ্রামবাসী অমিত দাসের কথায়, যাই হয়ে থাকুক, জন্মানোর পর একটা শিশুকে ফেলে দেওয়া মারাত্মক অপরাধ। তাছাড়া ডোবায় ফেলার আগে শিশুটি জীবিত ছিল কিনা, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। যদি জীবিত অবস্থায় ফেলা হয়ে থাকে, তাহলে কী ধরনের জঘন্য এবং নৃশংস কাজ করেছে, তা ভাবলেই শিউরে উঠছি।
পুলিস সূত্রে খবর, বটুন বাজার এলাকা দিনের বেলা জমজমাট থাকে। সন্ধ্যা হতেই অন্ধকারে ডুবে যায় এলাকা। বটুনের ওই এলাকায় একটি রাস্তার ধারে একটি ডোবা রয়েছে। সেখানে শিশুটিকে জলে ফেলে দেয় বলেই অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, ওই শিশুটি প্রথম অবস্থায় শাড়ি দিয়ে মোড়ানো ছিল। ডোবার জল থেকে ওই শিশুটিকে কুকুর বা শিয়াল একেবারে ধারে নিয়ে আসে। এদিন সকালে ওই এলাকার বাসিন্দারা দেখতে পান শিশুটির মাথা কুকুররা মিলে টানছে। এরপরেই শোরগোল পড়ে এলাকায়। খবর দেওয়া হয় পুলিসে। পুলিস এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শিশুটিকে যারা এই ভাবে ফেলে গিয়েছে, তাদের দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।
সম্প্রতি বালুরঘাটের লালমাটি এলাকায় ভাগাড়ে বস্তায় মোড়া অবস্থায় এক সদ্যোজাতকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সকালে শিশুর কান্না শুনে থমকে দাঁড়িয়েছিলেন এক যুবক। তিনিই শিশুটিকে উদ্ধার করেন। শিশুটি এখন রয়েছে চাইল্ড লাইনে।
তারপরেও বঙ্গী এলাকাতে সদ্যোজাতের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। সেই ঘটনাগুলিতে অপরাধী কারা, তার হদিশ পায়নি পুলিস। তারপর এদিনের ঘটনা দেখে বাসিন্দারা দাবি করছেন, ভালো করে তদন্ত করে অপরাধীদের না খুঁজে বের করলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।