ধান কেনায় ‘স্বনির্ভর’ জলপাইগুড়ি, রেশনে সারা বছরের চালের জোগান নিশ্চিত
বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জেলার জন্য রেশনে সারা বছরের চালের জোগান নিশ্চিত। ধান কেনায় ‘স্বনির্ভর’ হল জলপাইগুড়ি। খাদ্যদপ্তর সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলায় সারাবছরে রেশনের জন্য প্রয়োজন ৯৬ হাজার মেট্রিক টন চাল। গতবছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও এবার এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনে ফেলেছে জেলা খাদ্যদপ্তর। যা দিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় রেশন দেওয়া যাবে বলে দাবি খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকদের।
গত বছরের তুলনায় এবার অবশ্য জলপাইগুড়িতে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কম। এবছর রাজ্য থেকে জলপাইগুড়ি জেলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার টার্গেট দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার মেট্রিক টন। যা সময় শেষের (জুলাই) অনেক আগেই পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন জেলা খাদ্য নিয়ামক দাওয়া ওয়াংগেল লামা। তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ ধান ক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে অনেক বেশি কৃষকের বাড়িতে পৌঁছে যেতে পারায় এবার ধান কেনায় ‘স্বনির্ভর’ হওয়া সম্ভব হল। তাছাড়া গতবার আমরা ৩২ হাজার কৃষকের নাম নথিভুক্ত করাতে পেরেছিলাম। এবার সেই সংখ্যাটা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা খাদ্য নিয়ামক শুভাশিস বায়েন বলেন, ফড়েরা কৃষকের বাড়ি গিয়ে ধান কিনে আনে। কৃষক ধান বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় কম দামে তা ফড়েদের কাছে বিক্রি করে দেন। সেটা আটকাতে এবার আমরা ভ্রাম্যমাণ ধান ক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছি। কৃষক যে তারিখ নির্দিষ্ট করছেন, সেদিনই তাঁর বাড়ি থেকে ধান কেনা হচ্ছে। ফলে ফড়েরা এবার সুবিধা করতে পারছে না। গতবার যেখানে জেলায় তিনটি ভ্রাম্যমাণ ধান ক্রয়কেন্দ্র ছিল, এবার সেখানে সাতটি ভ্রাম্যমাণ ধান ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ফলে কৃষক এবার দুয়ার থেকেই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন। ধান বিক্রির তিনদিনের মধ্যেই তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাচ্ছে।
গতবার জলপাইগুড়ি জেলায় ধান কেনার টার্গেট দেওয়া হয়েছিল ২ লক্ষ ৩২ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে মাত্র ১ লক্ষ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনতে সক্ষম হয় জেলা খাদ্যদপ্তর। এবার যাতে কোনওভাবেই টার্গেট থেকে পিছিয়ে না থাকে জেলা, সেজন্য প্রথম থেকেই ধান কেনার উপর কড়া নজরদারি শুরু করেন জেলাশাসক শমা পারভীন। কোনওভাবে যাতে কৃষকরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রিতে বাধ্য না হন, সেব্যাপারে খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকদের বিশেষ নজর রাখতে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। যেসব কৃষক সেন্ট্রালাইজড প্রোকিওরমেন্ট সেন্টারে (সিপিসি) বিক্রির জন্য ধান নিয়ে আসতে পারছেন না, তাঁদের বাড়ি গিয়ে ধান কেনার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে খাদ্যদপ্তরকে। ফাইল চিত্র।