সংবাদদাতা, মালদহ: বুধবার শিবরাত্রি পালনের জন্য টানা তিনদিন নিরামিষ আহার করছেন অনেকে। যার জেরে তিনদিনে চাহিদা বেড়েছে বিভিন্ন নিরামিষ পদের। আমজনতার এই চাহিদা মেনে অনেক রেস্তোরাঁ এবং হোম ডেলিভারি সংস্থার মেনুতেও বদল এসেছে। সকালের প্রাতঃরাশ থেকে নৈশাহার শুদ্ধ সাত্বিক খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করে ক্রেতাদের মন জয় করতে চেয়েছেন তারা। ঠিক তেমনই এই তিনদিনের জন্য বাজারে কমেছে মাছ মাংস ডিমের চাহিদাও। ফলে বাজারে আসেননি অনেক মাছ বিক্রেতা। বুধবার শিবরাত্রি পালন উপলক্ষ্যে অনেকেই উপবাস করেছেন। তাঁরা মঙ্গলবার সংযম পালন করেছেন নিরামিষ খাবার খেয়ে। আবার শিবরাত্রির পরের দিন উপবাস ভঙ্গের রীতি রয়েছে। যাঁরা উপবাস করেননি তাঁদেরও অনেকে কেউ শিবরাত্রির দিন আবার কেউ কেউ টানা তিনদিনই নিরামিষ খাবার খেয়েছেন। এর ফলে আমিষ খাবারের চাহিদা কমেছে অনেক রেস্তোরাঁতেই। পরিস্থিতি অনুযায়ী রেস্তোরাঁগুলোতে এই তিনদিন ধরে তৈরি আমিষ খাবারও অনেক কম তৈরি হচ্ছে। আবার যাঁরা ক্রেতাদের বাড়িতে দৈনন্দিন খাবার সরবরাহ করেন তাঁরাও এই তিনদিনের জন্য বদল এনেছেন মেনুতে।
আমিষ খাবারের রীতিমত ভক্ত ইংলিশবাজারের রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মৌ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সপ্তাহে অধিকাংশ দিনই কিছু না কিছু আমিষ খাবার কিনে আনি। কখনও বাড়ি থেকেও অর্ডার করি। কিন্তু এই তিনদিন পুরো নিরামিষ।
বাড়িতেও মাছ মাংসের পাটই রাখিনি। রেস্তোরাঁ থেকেও কোনও আমিষ পদ কিনে আনিনি বা অর্ডার করিনি। মালদহ শহরের তালতলার বাসিন্দা কৌশিক বসু বলেন, স্ত্রী শিবরাত্রির উপবাস করেন। ফলে বাজার থেকে মাছ মাংস আনা নিষেধ। বিশুদ্ধ নিরামিষ খাবারেই রয়েছি তিনদিন।
মালদহ শহরের বেশ কয়েকজন রেস্তোরাঁ মালিকরা জানান, এই তিনদিন আমিষ খাবারের চাহিদা বেশ কম। তাছাড়া যেসব সংস্থা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেন তাঁদের অনেক কর্মীও শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে ছুটি নিয়েছেন। ফলে আমাদের আমিষ খাবার তৈরি অনেকটাই কমাতে হয়েছে। বিভিন্ন হোম ডেলিভারি সংস্থা তিনদিন ধরে সরবরাহ করছেন নিরামিষ ডালপুরি, সব্জি, আতপচালের ভাত, ছানার তরকারি এমনকি আলুসেদ্ধও। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ীই এই বদল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। একইভাবে বিভিন্ন বাজারের কয়েকজন খুচরো মাছ বিক্রেতা জানান, তাঁদের কেউ কেউ এই তিনদিন দোকান বন্ধ রেখেছেন। আবার কেউ দোকান খুললেও মাছ তুলেছেন খুব কম। সাধারণ মানুষের চাহিদার সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়ীক দিকের সামঞ্জস্য রাখতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তাঁরা।