• রিজেন্ট পার্কে যুবকের রহস্যমৃত্যু, উধাও বন্ধু
    বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। রাত পৌনে তিনটে নাগাদ টালিগঞ্জে মহানায়ক উত্তমকুমার সরণিতে মিলল সেই যুবকের মৃতদেহ। পাশে পড়ে হেলমেট। ঘটনাস্থলে নেই কোনও বাইক বা স্কুটার। পরিবারের দাবি, বাইক-স্কুটার চালাতেই জানেন না যুবক। কীভাবে যুবকের মৃত্যু? কার বাইকে চেপে বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছিলেন? কী হল পথে? দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনও রহস্য? উত্তর অজানা। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিস। 


    লালবাজার জানিয়েছে, মৃতের নাম অনুপ মণ্ডল (৩০)। তিনি হরিদেবপুর থানা এলাকার মহাত্মা গান্ধী রোডের বাসিন্দা। আলিপুর আদালতে এক আইনজীবীর কাছে মুহুরির কাজ করতেন। মঙ্গলবারও গিয়েছিলেন আদালতে। তারপর বাড়িও ফেরেন। রাতে ফের বের হন। গভীর রাতে মহানায়ক উত্তমকুমার সরণি থেকে এক ব্যক্তি ১০০ নম্বর ডায়ালে ফোন করে জানান, রাস্তায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক যুবক। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিস। যুবককে উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মৃতের মানিব্যাগে ছিল পরিবারের এক সদস্যের ফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করে  যোগাযোগ করে পুলিস। খবর পেয়ে তাঁর এক বন্ধু হাসপাতালে আসেন। ওই বন্ধুর দাবি, মঙ্গলবার রাতে চারজন একসঙ্গে পার্টি করেছিলেন। এরপরে দু’টি বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। অনুপ এক বন্ধুর পিছনের আসনে বসেছিলেন। সেই বন্ধুর নাম এখনও প্রকাশ্যে আনেনি পুলিস। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেই বন্ধুর সঙ্গে বুধবার দুপুর থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল পুলিস। কিন্তু তাঁর ‘পাত্তা’ মেলেনি। ফোনটি বন্ধ রেখেছেন তিনি। ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অন্যদিকে লালবাজারও জানিয়েছে, অনুপের ওই বন্ধুর খোঁজ চলছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুরো বিষয়টি জানা যাবে। দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় কোনও বাম্পারে ঝাঁকুনিতে অনুপ বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যেতে পারেন বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। আলাদাভাবে ঘটনার তদন্ত করছে লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের ফেটাল স্কোয়াড। 


    কিন্তু, সেখানেও খটকা রয়েছে পুলিসের। দুর্ঘটনা ঘটলে অনুপকে একা ফেলে দিয়ে অকুস্থল থেকে উধাও হয়ে গেলেন কেন ওই বন্ধু? শুধু তাই নয়, দুর্ঘটনা হলে সেখানে বাইকের ভাঙা অংশ পড়ে থাকার কথা। কিন্তু, সেখানে তেমন কোনও অংশবিশেষ পাওয়া যায়নি। বন্ধু যুবক কোনও হাসপাতালেও ভর্তি নেই বলে জেনেছে পুলিস। তাহলে কি এমন হল মহানায়ক উত্তম কুমার সরণিতে। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
  • Link to this news (বর্তমান)