• ট্যাবের টাকা নিয়েও উচ্চ মাধ্যমিক  পরীক্ষা দিচ্ছে না ৫৫ হাজার পড়ুয়া
    বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একাদশ শ্রেণিতে ট্যাবের ১০ হাজার টাকা পেলেও উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে না ৫৫ হাজার ছাত্রছাত্রী! বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য যে হিসেব দিয়েছেন, তা বিশ্লেষণ করলেই স্পষ্ট, এই খাতে ৫৫ কোটি টাকার সরকারি তহবিল স্রেফ ‘ড্রপ আউট’ ছাত্রছাত্রীদের পিছনে খরচ হয়ে গিয়েছে। একাদশ এবং দ্বাদশ দু’টি শ্রেণিতেই ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার জন্য যাতে মোবাইল ফোন বা ট্যাব ব্যবহার করতে পারে, তার জন্যই নীতি বদল করেছিল সরকার। ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে দ্বাদশের পরিবর্তে একাদশ থেকেই মোবাইল কেনার ১০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন। তবে, তার অসৎ সুযোগ নিতে শুরু করেছে এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। সোমবার, ৩ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ মঙ্গলবার, সকাল ১০টা থেকে দুপুর সওয়া ১টা পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। 


    উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য একাদশ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার। তাদের মধ্যে ‘এনরোল’ করেছে ৫ লক্ষ ৯ হাজার। স্বভাবতই অ্যাডমিট কার্ড পেয়েছে তারাই বা পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র দেওয়া হয় তাঁদেরকেই। এই এনরোলমেন্ট একেবারে দ্বাদশ শ্রেণির শেষদিক পর্যন্ত চলে। ২০২৩ সালে মাধ্যমিকে নথিভুক্ত এবং উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তাই এবছরও তাল মিলিয়ে ২ লক্ষ ৮১ হাজার পরীক্ষার্থী কমেছে উচ্চ মাধ্যমিকে। সেই সংখ্যা কমার কারণ অবশ্য ড্রপ আউট নয়। বেশকিছু বছর আগে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বয়সজনিত বিভ্রাটে নিচু ক্লাসে ছাত্রভর্তি কম হওয়ার ফলেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। ছাত্রীদের সংখ্যা ছাত্রদের তুলনায় ৪৭ হাজার ৫০০ বেশি। শতকরা হিসেবে, ছাত্রীরা ৫৪.৬৮ শতাংশ। তবে, এই হিসেব ছাপিয়ে উঠে আসছে ট্যাবের ১০ হাজার টাকা পাওয়া সত্ত্বেও ৫৫ হাজার ছাত্রছাত্রীর উচ্চ মাধ্যমিকে নাম নথিভুক্ত না করার ঘটনা।


    প্রশ্নপত্রের মাইক্রোপ্যাকেজিং, বারকোড এবং কিউআর কোডের নিরাপত্তা সহ সোমবার, ৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, এবার উচ্চ মাধ্যমিকের মোট ২১০০ কেন্দ্রের প্রতিটিতেই থাকছে মেটাল ডিটেক্টর। আর রাজ্যের ১৩৬টি স্পর্শকাতর কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি রাখা হবে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিভাইস বা আরএফআইডি। মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র খুঁজতে সাহায্য করবে এটি। তবে, গত বছরের তুলনায় (১৭৪টি) এবছর অনেকটাই কমেছে স্পর্শকাতর কেন্দ্রের সংখ্যা। সংসদ সভাপতি স্পষ্টই জানিয়েছেন, কেউ মোবাইল বা কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্র সহ যদি শেষদিনেও ধরা পড়ে, তাহলে তার সমস্ত পরীক্ষা বাতিল হবে। প্রসঙ্গত, এবছর সমস্ত প্রশ্নপত্রই খোলা হবে একেবারে পরীক্ষার হলে। ঘর নির্দিষ্ট করে ছোট ছোট প্যাকেটে প্রশ্নপত্র দেওয়া হচ্ছে। ফাঁস রুখতেই এই মাইক্রোপ্যাকেজিং ব্যবস্থা করেছে সংসদ।
  • Link to this news (বর্তমান)