সাড়ে তিন বছর আগে শিলিগুড়িতেও জেল খেটেছিল ধৃত ফাল্গুনী
বর্তমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: পিসিশাশুড়ি খুনের ঘটনায় ধৃত ফাল্গুনী ঘোষ ওরফে পিউ জেল খেটেছিল শিলিগুড়িতে। সাড়ে তিনবছর আগে এখানে মামাশ্বশুরের বাড়ি থেকে সে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে ছিল বলে অভিযোগ। গঙ্গার ঘাটে সুমিতা ঘোষের (৫৫) ব্যাগবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের পর বুধবার এমন অভিযোগ করেন তাঁর ভাইপো সপ্তক ঘোষ। তিনি ধৃত ফাল্গুনীর ভাশুর। বলেন, ফাল্গুনীকে দেখে বোঝার উপায় নেই, ও ঠান্ডা মাথার অপরাধী। আমাদের পরিবারের কেউ ওকে পছন্দ করে না।
শিলিগুড়ি শহরের সুভাষপল্লিতে সপ্তকবাবুর বাড়ি। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর প্রকৃত বাড়ি অসমের জোরহাটে। ২০১৮ সালের ১০ জুলাই শুভঙ্কর ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাল্গুনীর। শুভঙ্কর ইলেকট্রনিক্স গুডসের ব্যবসায়ী। পিসির মৃতদেহ উদ্ধারের পর ফাল্গুনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সপ্তকবাবু। তিনি বলেন, মামার বাড়িতে ঘুরতে এসে হাত সাফাই করেছিল ফাল্গুনী। সেই মামলায় ও জেলেও যায়। এরপর ভুল স্বীকার করে নিয়ে সে স্বামীর সঙ্গে সংসার করছিল। হঠাৎ করে আড়াই বছর আগে জোরহাট থেকে কলকাতায় নিজের মায়ের কাছে চলে যায়। এরপর বধূ নির্যাতনের এবং ভরণপোষণের মামলা রুজু করে। সেই মামলা চলছে। ওর সঙ্গে আমাদের আর কারও সম্পর্ক নেই। ওকে দেখে বোঝার উপায় নেই, ওর মাথায় কি চলছে। এককথায় ও ঠান্ডা মাথার অপরাধী।
সপ্তকবাবুর মামা সুব্রত ঘোষ শহরে বড় ব্যবসায়ী। এদিন দুপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়েও কারও দেখা পাওয়া যায়নি। তাঁর আইনজীবী চিন্ময় সাহা বলেন, ২০২১ সালের ৩ জুলাই স্ত্রী ফাল্গুনীকে নিয়ে মামার বাড়িতে আসেন শুভঙ্কর। তাঁরা ৮ আগস্ট পর্যন্ত ওই বাড়িতেই ছিলেন। এরপরই ওই বাড়ির লোকরা লক্ষ্য করেন বাড়ি থেকে সোনার গয়না ও নগদ মিলিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার সম্পত্তি উধাও। এরপরই শিলিগুড়ি থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন সুব্রতবাবুর স্ত্রী। পুলিস তদন্তে নেমে সেই বছরের ৩১ আগস্ট ফাল্গুনীকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের কাছ থেকে চুরি যাওয়া গয়নাও উদ্ধার হয়। আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে ধৃতকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত চারদিন জেলে ছিল। এরপর পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে ফাল্গুনীর জামিন পেতে সাহায্য করেন অভিযোগকারীরা। সেই মামলা এখন বিচারাধীন।
সেই ভাইবউয়ের এবার কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন সপ্তকবাবু। তিনি বলেন, সুমিতা ঘোষ আমার ছোট পিসি। তাঁর মৃত্যু কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।