নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: শহরজুড়ে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে নাজেহাল শহরবাসী। গত এক বছর বেশি সময় ধরে এই চিত্রে অভ্যস্ত পানিহাটি শহরের বাসিন্দারা। এই আবহে পানিহাটির রামচন্দ্রপুর ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আবর্জনা পরিষ্কার করতে প্রায় সাড়ে ছ’ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এক এজেন্সি ইতিমধ্যেই পাহাড়ের মতো জমে থাকা আবর্জনা সরানোর কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে, মহিষপোতায় পুরসভার জমিতে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। পুরসভা কর্তৃপক্ষের আশা, এই কাজ শেষ হলে আগামী বছর শহরের জঞ্জাল সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে পানিহাটিতে জঞ্জাল সমস্যা তীব্র হয়েছে। দূষণের অভিযোগ তুলে শহরের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দারা ভাগাড়ে আবর্জনার গাড়ি ঢোকা বন্ধ করতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শহরের সমস্ত মূল রাস্তা ও অলিগলিতে আবর্জনার স্তূপ জমতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে কেএমডিএ সহযোগিতার হাত বাড়ায়। প্রতিদিন গাড়ি করে আবর্জনা ধাপায় নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। মাঝেমধ্যেই আইনি জটিলতায় আবর্জনা সংগ্রহ বন্ধ হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়। এই পরিস্থিতিতে শহরের নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড চালু না হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতিতে রামচন্দ্রপুরের পুরনো ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্ত আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য প্রায় ৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একটি এজেন্সি কাজও শুরু করেছে। সেখানে আবর্জনা পৃথকীকরণ করে নিয়ে যাওয়া হবে। দক্ষিণ দমদমের প্রমোদনগরের মতো এখানে জমে থাকা সব আবর্জনা সাফ করার পর আধুনিক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট তৈরি করা হবে। পুরসভার আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ড পরিষ্কার হওয়ার পর নতুন করে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রজেক্টের কাজ শুরু হবে। ওই প্রজেক্ট তৈরি হলে দূষণ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া মহিষপোতায় পুরসভার নিজস্ব জমি রয়েছে। ওই জমিতে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য কেএমডিএর অফিসে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তাতে বিলকান্দা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কেএমডিএ কিছুটা একমত হয়েছে। ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই জমিতে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এখানেও বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী বছর এই দুই জায়গা প্রস্তুত হয়ে গেলে শহরের আবর্জনা পৃথকীকরণ করে এখানে পাঠানো হবে। তখন পাকাপাকিভাবে আবর্জনা সমস্যার নিরসন হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে বদ্ধপরিকর পুরসভা। চেয়ারম্যান মলয় রায় বলেন, রামচন্দ্রপুরের আবর্জনা বের করার কাজ শুরু হয়েছে। মহিষপোতায় সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছে। এই দুই জায়গার কাজ সম্পন্ন হলে শহরের আবর্জনা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। -নিজস্ব চিত্র