দল ভাঙতে চলছে চক্রান্ত। মিথ্যে প্রচারের জন্য সংবাদ মাধ্যমের একাংশকে তুলোধোনা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের মেগা সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কড়া বার্তা তৃণমূল সাংসদের। একইসঙ্গে রাজনৈতিক ময়দানে ছড়িয়ে পড়া গুজব নিয়েও দিলেন স্পষ্ট জবাব।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘নির্বাচন গিয়েছে কিন্তু তার পরও একের পর এক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বাজারে রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যাবে। আমার গলা কেটে দিলেও কাটা গলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বেরোবে।’
এখানেই শেষ নয়, সংবাদমাধ্যমের একাংশের উদ্দেশে তোপ দেগে তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, ‘আমি বেইমান নই। বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নতুন দল আসছে। বিজেপির হাতে কল্কে খাওয়া কিছু সাংবাদিক এই কাজ করছেন। খবরে যা দেখছেন সব বিশ্বাস করবেন না।’ স্পষ্ট করে দিয়ে অভিষেক জানান, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল স্তরের কর্মী প্রত্যেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। ২৬-এর নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী করার লক্ষ্যেই সকলকে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বছর পেরোলেই ফের বিধানসভা নির্বাচন। কর্মীদের এখন থেকেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার বার্তা দলের সাধারণ সম্পাদকের। কর্মীদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘সর্বস্তরের কর্মীকে নিয়ে কাজে নামতে হবে। কে কবে ফোন করে নির্দেশ দেবে তার পর কাজে নামব, এই অপেক্ষায় না থেকে নিজেরা যাঁরা দলকে ভালোবাসেন, তাঁরা মানুষের কাছে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী কর্মসূচি সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। লড়াইয়ে এক ছটাক জমিও ছাড়া যাবে না। বুকের রক্ত দিয়ে আগলে রাখতে হবে দলকে।’
একইসঙ্গে পরবর্তী নির্বাচনে আসন আরও বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা অভিষেকের। তাঁর কথায়, শেষ নির্বাচনে তৃণমূল যা আসন পেয়েছিল এ বারে লক্ষ্যমাত্রা থাকবে তারও বেশি। বিধানসভায় ২১৫ আসনের বেশি আসনে জেতার টার্গেট রাখলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘যারা মিছিলে হাঁটছেন, পোস্টার লাগাচ্ছেন, মাঠে-রাস্তায় নেমে কাজ করছেন, এমন কর্মীরাই দলের আসল সম্পদ।’ এদেরকে অবহেলা না করার বার্তা নেতাদের।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে দলের কর্মীদের শৃঙ্খলা সম্পর্কেও সতর্ক করেন অভিষেক। বিশেষত সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখেন যে সব নেতারা তাদেরকে সতর্ক করলেন তিনি। দলের সম্পর্কে বেফাঁস বক্তব্য নিয়েও কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ। বলেন, ‘অনেকে সস্তায় খবরে টিকে থাকতে দলের শৃঙ্খলা ভেঙে অনেক কথা বলছেন। যে কর্মী দলকে প্রকৃত ভালোবাসেন, তিনি কখনও দলের শৃঙ্খলা ভেঙে কোনও কথা বলবেন না। আমি এমএলএ, আমি সাংসদ, আমি মুখপাত্র, আমার কত ক্ষমতা... এই দেখাতে যারা এমন কাজগুলো করছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। একদিকে ভালোই হয়েছে।’
এই প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টেনে আনেন মুকুল-শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ। বলেন,‘অতীতে যারা বেইমানি করেছিলেন, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, তাদের চিহ্নিত আমি করেছিলাম। এ বার কেউ যদি বেইমানি করেন তাহলে তাঁকে চিহ্নিত করে, প্যাকেট করে, বাংলাছাড়া করার দায়িত্বটা আমি আমার কাঁধে তুলে নিলাম।’ দলের শৃঙ্খলাকে সর্বাগ্রে মাথায় রেখে এখন থেকেই পরের বিধানসভা ভোটের জন্য কাজে নামার নির্দেশ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।