• বায়োমেট্রিক মেশিনে আঠা! সিম তোলা হচ্ছে জানেনই না ক্রেতা, ধৃত আরও ৪
    এই সময় | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: মোবাইল ফোনের সিম কার্ড নিয়ে অসাধু চক্রের জালিয়াতি রুখতে গ্রাহকদের সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।

    লালবাজারের গোয়েন্দাদের বক্তব্য, অনেক সময়েই ঘন বসতিপূর্ণ তল্লাটে গজিয়ে ওঠে সিম কার্ড বিক্রির অস্থায়ী বিপণি। যেখানে একটি সিম কার্ড নিলে আর একটি ফ্রি–র মতো আকর্ষক অফার দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, সিম কার্ডের ওই রকম পসরা নিয়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় বসেছিল আসলে জালিয়াতরা। কোথাও সিম নিতে গেলে বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন মেশিনে সিমকার্ডের ইচ্ছুক ক্রেতা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর তাঁকে সেই তথাকথিত বিক্রেতা জানায় যে, টেকনিক্যাল ফল্ট–এর কারণে গোটা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না–হওয়ায় সিম দেওয়া যাচ্ছে না।

    ইচ্ছুক ক্রেতার অজান্তেই কিন্তু তাঁর সমস্ত তথ্য নিয়ে সিম–বিক্রেতা একাধিক সিম তুলে মোটা টাকার বিনিময়ে সেগুলো পাঠিয়ে দেয় সাইবার প্রতারকদের কাছে। আবার কখনও বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন মেশিনে ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জায়গায় আঠা লাগানো থাকে। ক্রেতার আঙুলের ছাপ ওই ভাবে নিয়ে তাঁর অজান্তে তোলা হয় একাধিক সিম। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) রূপেশ কুমারের বক্তব্য, ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট, অনলাইন ব্যাঙ্ক ফ্রড এবং অন্যান্য সাইবার জালিয়াতিতে এ ধরনের সিম ব্যবহার করা হচ্ছে।’

    ক্রেতা বা গ্রাহকের অজান্তে তাঁর আঙুলের ছাপ ও অন্যান্য নথি হাতিয়ে মোবাইলের সিম কার্ড তুলে সেগুলো সাইবার প্রতারকদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে আরও চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সজল মণ্ডল, অরিজিৎ রায়, মহম্মদ রেজা ও রাজেশ মাহাতো। সজল প্রগতি ময়দান, অরিজিৎ এন্টালি, মহম্মদ রেজা তিলজলা ও রাজেশ তপসিয়ার বাসিন্দা। বেলেঘাটা ও তপসিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই চার জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

    এর আগে, মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল চার জনকে। সব মিলিয়ে এই চক্রে ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮। মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া চার জনের মধ্যে অনির্বাণ সাহা ও দেবলীনা চক্রবর্তী স্বামী–স্ত্রী। ওই দম্পতি জালিয়াতি চক্রে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। কারসাজি করে তারা প্রচুর সংখ্যক সিম জোগাড় করে মোটা টাকায় বিক্রি করেছিল বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন।

    গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ভারতের বাইরে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়ার মতো দেশের লোকজনও এই চক্রে জড়িত। অর্থাৎ, সিম কার্ড জালিয়াতির এই চক্রটি আন্তর্জাতিক।

    তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা সাতটি মোবাইল ফোন, চারটি বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন মেশিন, ৭০০–র বেশি সিম কার্ড (প্রিঅ্যাকটিভেটেড ও ‘র’) বাজেয়াপ্ত করেছেন।

  • Link to this news (এই সময়)