প্রদ্যুত দাস: ২ টাকা কেজি টমেটো, বিনস মাত্র ৫ টাকা কিলো হলদিবাড়ির বাজারে। সঠিক দাম না পেয়ে চিন্তাগ্রস্ত চাষী থেকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। অথচ হলদিবাড়ি সংলগ্ন জলপাইগুড়িতে খোলা বাজারে অনেক বেশি দামে টমেটো, বিনস সহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। খোলা বাজারে টমেটো প্রতি কিলো ১০ টাকা, বিনস ২০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে।
হলদিবাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা উত্তরবঙ্গের মধ্যে বিভিন্ন সবজি চাষে খ্যাতি রয়েছে। এখন টমেটো, বিনস, আলু, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মটরশুঁটি সহ লঙ্কার মরসুম। ফলন ভালো অথচ সঠিক দাম না পেয়ে হতাশ সাধারণ কৃষক থেকে ব্যবসায়ীরা।
জলপাইগুড়ি জেলা এবং পার্শ্ববর্তী হলদিবাড়ি তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকা যেমন, বেলতলি, পারমেখলিগঞ্জ, হেম কুমারী, দেওয়ানগঞ্জ, ডিয়াবাড়ি, সাতকুড়া, মানিকগঞ্জ, মালকানি, নন্দনপুর বোয়ালমাড়ি এইসব এলাকায় বিপুল পরিমাণে সবজি চাষ হয়ে থাকে বলে খবর। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভিন রাজ্যেও টমেটো সহ বহু সবজি এইসব এলাকা থেকেই পাঠানো হয়ে থাকে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
উল্লেখ্য গতবছর ধাপে ধাপে দাম বেড়েছিল টমেটোর, পাশাপাশি বিনস বাজারে টমেটো বিক্রি করে চাষিরা হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন এবং বিভিন্ন রাজ্যে টমেটো পাঠিয়ে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করতে পেরেছিলেন। তবে এবছর ঠিক তার উল্টো পরিস্থিতি। একদিকে যেমন বাজারে দাম নেই টমেটোর অন্যদিকে বাইরেও টমেটোর চাহিদা কম। এই কারণেই দুই টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষীরা এবং ব্যবসায়ীরাও বাইরে টমেটো না পাঠাতে পেরে টান পড়েছে তাদের উপার্জনে। সেরকমটাই জানালেন রাহুল সরকার নামে হলদিবাড়ি বাজারের এক টমেটো ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, দুই থেকে আড়াই টাকা কেজি দরে টমেটো কিনছি আমরা। তিনি আরও বলেন বাইরে চাহিদা না থাকার কারণে আমরাও মাল পাঠাতে পারছি না, তবে খুব শীঘ্রই টমেটোর দাম বাড়ার কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই বলে জানান হলদিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ীরা।
ফেরির পাশাপাশি, এবার দাম তলানিতে এসে পৌঁছেছে বিনসের। ছয় থেকে সাত টাকা কেজি বিনস পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে হলদিবাড়ি বাজারে। উল্লেখ্য বিনস হচ্ছে এক ধরনের সিম জাতীয় সবজি, যা বিভিন্ন ধরনের তরকারির পাশাপাশি ফ্রাই রাইস, চিকেন বিরিয়ানী সহ অন্যান্য মুখরোচক খাবারে ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে এই বিনস সমতলের পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকাতেও চাষ হয়ে থাকে। এমনকি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমারেও কম বেশি বিনস চাষ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে ৫ টাকা কেজি বিমস বিক্রি করে অনেকটাই চিন্তাগ্রস্ত চাষিরা। এমনই জানাচ্ছেন হলদিবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ আলী ও হলদিবাড়ি এলাকার চাষী জনক রায়রা। তাঁরা বলেন বর্তমানে ছয়-সাত টাকা কেজি দরে বিনস বিক্রি হচ্ছে হলদিবাড়ি বাজারে। তবে উৎপাদন বেশি থাকলেও চাহিদা কম থাকার কারণে চাষীরা তেমন লাভবান হতে পারবেন না।