অয়ন ঘোষাল: ট্যাংরা কাণ্ডে (Tangra Triple Death) চাঞ্চল্যকর বয়ান নাবালকের। রাজ্য শিশু কমিশনের দুই সদস্যের সামনে চাঞ্চল্যকর বয়ান। নাবালক প্রতীপ দে বলেছে, 'যোগা এবং জিম করার ফলে পায়েসে মেশানো ঘুমের ওষুধ খেয়ে কিছুই হয়নি আমার। মরার ভান করে শ্বাস আটকে মৃতের অভিনয় করেছি। এরপর কাকা বালিশ চাপা দিয়ে আমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে। আমি বেশ কিছুক্ষণ শ্বাস আটকে রেখেছিলাম। এরপর কাকা এবং বাবা ছাদে আত্মহত্যা করতে চলে যায়।'
নাবালকের আরও দাবি, আমি দোতলায় উঠে দেখি মা কাকিমা এবং বোন মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। মা-কাকিমা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তাদের খুন করা হয়। বাবা ঘটনার দুইদিন আগে বলেছিল, এবার পাওনাদাররা ধাওয়া করবে। মৃত্যু ছাড়া আর কোনোও উপায় নেই বলেছিল বাবা-কাকা। আমাকে সেদিন আলোচনার সময় ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমি সেদিন ঘরে থাকলে অন্য কোনও রোজগারের উপায় নিয়ে পরামর্শ দিতে পারতাম। বাবা কাকার ব্যবসা একেবারে লাটে উঠেছিল।'
এরপরই আর শিশু সুরক্ষা কমিশন নাবালককে হোমে পাঠাতে চায় না। তারা কোনও একজন আত্মীয়ের কাছেই তাকে রাখতে চায়। প্রসূনের শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে নাবালককে রাখতে চায় কমিশন। বৃহস্পতিবারই এই দুজনের সঙ্গে কমিশন কথা বলবে। সরকারি স্কিমে এই নাবালক সাবালক হওয়া পর্যন্ত মাসে মাসে প্রসূনের শ্বশুর- শাশুড়ি মাসোহারা পাবেন। তারাও নিতে রাজি না হলে একটি ফ্যমিলি পাওয়া গিয়েছে, যারা এই নাবালকের ভরণ পোষণে রাজি। সব বিকল্প খোলা রেখে চেষ্টা চালাবে শিশু সুরক্ষা কমিশন। জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ার পার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, নাবালকের বাবা এবং কাকা দুজন অভিভাবক জীবিত। নাবালক নিজে এদের কারুর জিম্মায় বা কাস্টডিতে থাকতে চায়না। এমনটাই সে পুলিসকে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল। ঘটনার খবর পেয়ে মুম্বই থেকে সস্ত্রীক কলকাতায় উড়ে আসা প্রণয়ের শ্যালক, অর্থাৎ নাবালকের মামা এবং মামি নাবালকের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় পরিস্থিতি জটিল হয়। অভিভাবকরা জীবিত থাকায় আইনত সরাসরি নাবালককে হোমে পাঠানো যায় না। ট্যাংরা থানার আধিকারিকরা এই মর্মেই রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।