জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বছর ঘুরলেই ছাব্বিশের মহারণ। বলতে গেলে দরজায় কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দলের রণকৌশল ঠিক করতে, দলের কর্মীদের একপ্রকার ঝাঁকুনি দিতেই যেন আজকের এই মেগা মিট। যে মিট থেকে এবার ভোটে রিগিং, ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুললেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। শুধু অভিযোগ করা-ই নয়, ভোটে কারচুপি কোথা থেকে হচ্ছে, ভোটে ভুয়ো ভোটার রুখতে কী করতে হবে, সে সবও বাতলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।
মমতা বলেন, "২০২৪-এর নির্বাচনে বাংলার মা মাটি মানুষ যে রায় আমাদের দিয়েছে, ২৯টা আসন আমদের দিয়েছে, ৫টা আসন কারচুপি করে হারানো হয়েছে, নাহলে আমরা ৩৪ টা আসন পেতাম। এখন লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে আমাদের ৪২ জন সাংসদ রয়েছেন। ২০০৪-এ সবাইকে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হল। ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু সিট পেয়েছিলাম মাত্র ১ টা।"
বলেন, "আমি ইলেকশন কমিশনকে খুব রেসপেক্ট করতাম। এখন ইলেকশন কমিশনার কে জানেন? এখন টোটালটাই বিজেপির লোক দিয়ে ভরা। এই ইলেকশন কমিশন যতদিন নিরপেক্ষ না হবে ততদিন অবধি আমাদের লড়াই থামবে না। আজ মহারাষ্ট্রে হারিয়েছে কী করে, দিল্লিতে হারিয়েছে কী করে! ভোটার লিস্টে কারচুপি করে। অনলাইনে দিল্লি থেকে করেছে ইলেকশন কমিশনের অফিসে বসে। এই করে দিল্লিতে হারিয়েছে, মহারাষ্ট্রে হারিয়েছে। আমরা এই খেলাটা ধরে ফেলেছি। ওরা এখন বাংলাকে টার্গেট করেছে।"
তোপ দাগেন, "বাংলার লোক যাতে ভোট দিতে না পারে, তাই বাইরের লোকের নাম ঢোকাচ্ছে।" ভোটার কার্ডে বেশকিছু বাইরের লোকের নাম উল্লেখ করে মমতা বলেন, "হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহার এসব জায়গা থেকে নাম ঢোকানো হয়েছে। মুর্শিদাবাদের লোকের নাম ঢুকিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের তালিকায়। কারণ আগে মুর্শিদাবাদের ভোট হয়ে যাবে, তারপর তাদের এখানে নিয়ে আসবে।" মমতা সাফ হুঁশিয়ারি, "বাংলা বহিরাগতের স্বাগত জানায়, কিন্তু বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে দেবে না।"
বলেন, "ভোটার লিস্ট থেকে আপনার নাম বাদ! গুজরাট-হরিয়ানার এপিক কার্ডের নাম ঢোকানো হচ্ছে। আর এটা হচ্ছে খোদ ইলেকশন কমিশনের অফিস থেকে। ২০২৬-এর খেলাটা তাই আরেকটু জোরে করতে হবে। আর এই কাজটা শুরু করতে হবে প্রথমে ভোটার লিস্ট দিয়েই। বুথ কর্মীদের নামান। আমি ১০ দিন সময় দিচ্ছি এগুলো দেখুন। কোনও অনলাইন নয়, ফিল্ড সার্ভে করে নাম ঢোকাতে হবে। ৭ দিনের মধ্যে জেলাস্তরে একটা করে কোর কমিটি আমরা করে দেব। ৩ দিন পর পর কতটা সার্ভে করতে পারলেন সেই রিপোর্ট তৃণমূল ভবনে সুব্রত বক্সীর কাছে পাঠাতে হবে।"
ভোটার লিস্ট সংক্রান্ত একটা কমিটিতে সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সুজিত বোস, মলয় ঘটক, পার্থ ভৌমিক, উদয়ন গুহ, ফিরহাদ হাকিম, ডেরেক ও ব্রায়েন, অরূপ বিশ্বাস, মালা রায়, নির্মল চন্দ্র রায়, সামিরুল ইসলাম, বাপি হালদার, পুলক রায়, জগদীশ বসুনিয়া, মোশারেফ হোসেন, মানস ভুঁইয়া, রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়, প্রকাশ চিক বরাইক, সায়নী ঘোষ সহ আরও বেশ কয়েকজন নেতানেত্রী থাকবেন।