আজ, নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের রাজ্য সম্মেলন। প্রধান বক্তা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন রাজ্য ও ভিন রাজ্যের পদাধিকারী-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। স্টেডিয়ামের ভিতরে উপস্থিত প্রায় ১৯ হাজার নেতা-কর্মী। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলনেত্রী কী বার্তা দিলেন তার প্রতি মুহূর্তের LIVE UPDATE:
দুপুর ২.১০: তৃণমূলকে তোপ দেগেছে বিজেপিরও। রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “দাদাভাই গিয়েছে। এবার দিদিও যাবে।”
দুপুর ১.৩০: প্রায় একঘণ্টা পর বক্তব্য শেষ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেলা ১২.২৯: বক্তব্য শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন,
আমি আজ যা বলব, ২০ বছর পর তৃণমূল কংগ্রেস একই কথা বলবে। ঝগড়া করবেন নাকি একসঙ্গে কাজ করবেন?
দু’-একজন নেতা গজিয়ে উঠছে। অনেকে বলছেন, আমি তৃণমূল করি না, অমুক দাদার রাজনীতি করি। মনে রাখবেন, আমি রোজ খুঁটিয়ে ফেসবুক, টুইটার দেখি। কে কী বলছেন সেটাও খুঁটিয়ে দেখি। মনে রাখবেন, আপনার একটাই নেতা জোড়া ফুল। দল না থাকলে আপনি গ্রাম সংসদে যেতে পারবেন না।
অভিষেক যা বলেছে সেটাই অ্যাকচুয়ালি কারেক্ট। ও যা বলতে পারে, আমি সেটা পারি না। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের জামানত জব্দ করুন। বাংলার মাকে এগিয়ে যেতে দিন।
একে বিজেপি। সঙ্গে আবার জগাই-মাধাই।
দেশটাকে বেচে দিয়েছে। সব ব্যাঙ্ক বেচে দিচ্ছে। এরপর রেলের পালা। এয়ার ইন্ডিয়া বেচে দিয়েছে। বিমা বেচে দিয়েছে। এজেন্সি বড় নাকি মানুষ বড়, আমি দেখতে চাই।
অন্য দেশ অনুপ্রবেশকারী বলে দেশের লোকেদের শিকল পরিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আপনারা ওখানে বসে গালগল্প করছেন। কেন প্লেন পাঠিয়ে ফিরিয়ে আনছেন না? কলম্বিয়া পারলে আমরা কেন পারব না? কেন সসম্মানে ওদের ফিরিয়ে আনছেন না? কেন বলছেন না ওদের এনে এখানে চাকরি দেব?
সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে কমিটি গড়ে দিচ্ছি। তিনদিন অন্তর রিপোর্টে দেবে। সমস্ত জেলা থেকে আসা রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হবে।
১০ দিন সময় দিচ্ছি। অনলাইনের সঙ্গে ভোটার তালিকা মেলান। ভুয়ো ভোটার খুঁজে বের করুন।
খেলা আবার হবে। ২০২৬-এর খেলাটা হবে আরেকটু জোরে।
আমরা ২৬ দিন ধরনা দিতে পারি। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সামনে ধরনা দিতে পারি।
এটা হচ্ছে ইলেকশন কমিশনের আশীর্বাদে। যারা এই কাজ করেছে তাদের হাতেনাতে ধরব। কিছু বিএলআরও দায়িত্ব পালন করেনি। জেলাশাসকদেরও দায়িত্ব ছিল। কিন্তু নির্বাচন এলেই দেখি প্রশাসনকে ধমকে-চমকে, দিল্লিতে ডেকে নিজেদের মতো চালায়। এত ভয় পাওয়ার কী আছে? ওদের তো আয়ু দু’-তিন মাসের। তারপর তো আমরাই থাকব।
রহস্যটা উন্মোচন করে দিলাম। এবার আপনাদের দায়িত্ব। বাংলার মানুষের কাছে অনুরোধ, নিজের ভোটার কার্ড, ভোটার তালিকা দেখে নিন। নাহলে এনআরসি, সিএএ করে বাদ দিয়ে দেবে।
প্রয়োজনে বাংলায় আরও একটা জাগরণ করতে হবে। সেই জাগরণ করবেন আপনারা। বহিরাগতদের বাংলা সম্মান করে। কিন্তু বাংলা দখল করতে এলে ছেড়ে কথা বলবে না। এটা বাংলা দখলের খেলা।
অনলাইনে কারসাজি করে ভুয়ো ভোটারের নাম তুলে দিয়েছে। আধার কার্ড কেলেঙ্কারি করেছে ওরা। এখানকার ভোটারদের এপিক নম্বর নিয়ে বাইরের রাজ্যের ভোটারের নাম জুড়ে দিয়েছে। বাংলার ভোটের লিস্টে সব হরিয়ানার লোকের নাম। ঠিকানা, বাবার নাম সব হরিয়ানার। এই করে দিল্লি-মহারাষ্ট্রে হারিয়েছে। ওরা খেলাটা ধরতে পারেনি। আমরা ধরে ফেলেছি। ভোটার তালিকায় গুজরাট-হরিয়ানা ভর্তি।
এখানে অনেক এজেন্সি পাঠিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ডস এবং কোম্পানি ইন্ডিয়া ৩৬০ নামে দুটি এজেন্সি আছে। দুটো- যতদূর আমি খবর জোগাড় করতে পেরেছি, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং কিছু বিএলআরকে নিয়ে কাজ করেছে।
ভোটের আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ভোটার লিস্ট ক্লিন করতে হবে। নাহলে এই নির্বাচনে যাওয়ার দরকার নেই।
পিকের আইপ্যাক এটা নয়। ওরা অন্য জায়গায় কাজ করে। ওঁ একটা রাজনৈতিক দলও করেছে। কাজটা সবাইকে একসঙ্গে করতে হবে। এদের নামে উলটোপালটা বলা বন্ধ করুন।
ছট পুজোয় ২ দিন ছুটি দিই, দিল্লিতে কদিন ছুটি দেন?
বাংলার সংস্কৃতি বিপন্ন। তফসিলি জাতির ভোট নিয়ে যায়, আর তারপর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে থেকে বিআর আম্বেদকরের ছবি সরিয়ে দেন। হিন্দুধর্মের অপমান করছে। ভোটের সময় মতুয়া আর ভোট মিটে গেলেই ফতুয়া! আমরা সর্বধর্ম ভালোবাসি। কোনটা করি না?
যারা ভালো কাজ করছেন, তাদের পদোন্নতি করব। কিন্তু যারা কাজ করেন না, শুধু বিবৃতি দেন, দলের সমালোচনা করেন, বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করেন না, তাদের আমি ভালোবাসি না।
বিজেপি আর ২-৩ বছর যা করার করবে। বাংলাকে ওরা টার্গেট করেছে কারণ ওদের বিরুদ্ধে বাংলা লড়ে। অন্যরা লড়তে পারে না। বাংলা সর্ব ধর্মে বিশ্বাস করে।
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে নির্বাচন কমিশনের মাথায় বসিয়েছে। সবটাই বিজেপির লোক বসিয়ে দিয়েছে। গণতন্ত্রের এমন দুরবস্থা আগে দেখিনি।
তৃণমূল নেতাদের ফোন ট্যাপ করে।
আর জি করে কোনও সমাধান করতে পারেনি সিবিআই। খালি বড় বড় কথা বলে।
আমরা মানুষের পাহারাদার। কিন্তু দিনে কী করছি, রাতে কী করছি, মানুষ তা দেখে। বুঝতে হবে মানুষও আমাদের পাহারাদার।
ভোট এগিয়ে এলেই এজেন্সির তৎপরতা বাড়ে। ভোট এলে মনে হয়, তৃণমূলের কাকে কাকে চার্জশিট দিতে হয়। ভোট এলে মনে পড়ে, কাকে কাকে জেলে ঢোকাতে হবে।
২০২৪ সালে বাংলার মানুষ আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। জোর করে ৫টি আসনে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাহলে ৩৪টি আসন পেতাম।
মাত্র ২ দিনের নোটিসে বিশেষ অধিবেশন। তাও আপনারা এসেছেন, ধন্যবাদ।
চব্বিশের পর অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝা গিয়েছে, উৎসব গিয়েছে, তাই কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারিনি।