মমতাকে নিয়ে ঠাট্টা করায় ব্যক্তির নামে ২০২২-এ হয় মামলা, 'ব্যর্থ' পুলিশকে HC বলল…
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ইউটিউব সহ নানা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য এবং উপহাস করার অভিযোগে ফৌজদারি মামলা হয়েছিল একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২২ সালে এই মামলাটি হয়েছিল সৌরভ পাল নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে উচ্চ আদাতের বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তা বলেন, 'কেস ডায়েরিতে উপলব্ধ তথ্য যাচাই করার পরে এই আদালত বর্তমান আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনও পর্যাপ্ত বা যৌক্তিক প্রমাণ বা এমনকি প্রাথমিকভাবে মামলার কারণও খুঁজে পায়নি। কোনও প্রমাণ ছাড়াই কেবল চার্জশিট দাখিল করলেই পিটিশনারের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য যথেষ্ট হবে না।'
এদিকে এই মামলায় তদন্তকারী অফিসার সঠিক ভাবে কোনও তদন্ত করেননি বলেও পর্যবেক্ষণ করেছে উচ্চ আদালত। এদিকে সকার পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, তদন্তের সময় পর্যাপ্ত থ্যপ্রমাণ জোগাড় করা হয়েছিল। আরও দাবি করা হয়, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই অভিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে কুরুচিকর কন্টেন্ট সম্প্রচার করেছিলেন। এই আবহে আদালত জানিয়েছে, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত ইউটিউবারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা বেশ গুরুতর। তবে তদন্তকারী অফিসার সেই সংক্রান্ত কোনও ক্লিপ তথ্যপ্রমাণ হিসেবে সংগ্রহ কতে পারেননি। তিনি শুধুমাত্র বয়ানের ভিত্তিতে চার্জশিট দাখিল করেছেন।
আদালত বলে, 'এই গোটা কেস রেকর্ডে আদালত দেখতে পায়নি যে অভিযুক্তের মোবাইল বা অন্য কোনও গ্যাজেট কোনও বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্যে। তিনি যে সেই সব ডিভাইস ব্যবহার করেই সমাজের শান্তি বিঘ্ন ঘটাতে ভিডিয়ো করেছিলেন, তার কোনও প্রমাণ নেই। এদিকে ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিয়ো ক্লিপ সংক্রান্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেননি তদন্তকারী। এর জেরে প্রাথমিক অভিযোগও প্রমাণ করা যায় না।' এই আবহে চার্জশিটে তথ্যপ্রমাণের অভাবের উল্লেখ করে মামলাই খারিজ করে দেন বিচরপতি।
এর আগে প্রায় ১১ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর কার্টুনকাণ্ডে পূর্ব যাদবপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে কলকাতার পূর্ব যাদবপুর থানায় FIR দায়ের হয়। তৎকালীন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর অপসারণ ও মুকুল রায়কে সেই আসনে বসানো পর একটি কার্টুন শেয়ার করেছিলেন অম্বিকেশবাবু। এর জেরে স্থানীয় তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা তাঁকে বাড়িতে এসে মারধর করে বলে অভিযোগ। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গভীর রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে থানায় আটকে রাখে পুলিশ। ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আলিপুর আদালতের চিফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন জানান অম্বিকেশবাবু। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এর পর অ্যাডিশনাল সেসন জজের এজলাসে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন জানান তিনি। সেই আবেদন গৃহীত হয়েছিল।