বাল্যবিবাহ রুখতে ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’-র মতো একাধিক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। ফলও মিলছে হাতেনাতে। নিজের বিয়ে রুখে দিয়ে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামীণ মেয়েরা। পরিসংখ্যান তুলে ধরে সেই ব্যাখ্যা দিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ২০২১-২২ সালে জেলায় ৫৭ জন কন্যাশ্রীর বিয়ে (বাল্যবিবাহ) রুখে দেওয়া হয়েছে। পরের বছর এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৮-তে। তার পরের বছর এই সংখ্যাটা প্রায় সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলে। ৯৯ জন নাবালিকার বিয়ে রুখে দেওয়া হয়। আর, চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২৪-'২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ১৪৪ জন কন্যাশ্রীর বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়া হয়েছে। বলাইবাহুল্য, প্রশাসনের এই সাফল্যে অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে স্বয়ং কন্যাশ্রীরাও। তারা নিজেরাই স্কুল এবং প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে রুখে দিয়েছে নিজেদের বিয়ে।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং নাবালিকাদের গর্ভধারন রুখতে ‘আমরা করব জয়’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। সেখানেই জেলাশাসক বলেন, ‘এই লড়াই আমাদের জিততেই হবে। জেলা থেকে বাল্যবিবাহ নির্মূল করতেই হবে। ধীরে ধীরে জেগে উঠছে আমাদের কন্যাশ্রীরা। বাল্যবিবাহ রুখে দিচ্ছে তারা। সকলেই পড়াশোনা করতে চায়। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়।’
পড়াশোনার জন্য ‘কন্যাশ্রী’-র মতো আর্থিক সাহায্য প্রদানের প্রকল্প অনেকটাই সাহায্য করছে। যে কারণে বহু প্রত্যন্ত এলাকাতেও অনেক সময়ে পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন পড়ুয়ারাই। বিষয়টি মেনে নিচ্ছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গীও।
তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে এটা ঠিক, তবে এই বিষয়ে আমাদের আরও সাফল্য অর্জন করতে হবে। অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।’ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে জেলায় ১৭.৮ শতাংশ নাবালিকা (১১৫৬১ জন) গর্ভধারণ করেছিল। এবার তা ১৬ শতাংশে (৮১৩৫ জন) নেমে এসেছে। আগামী দিনে এটা আরও কমবে বলেই ধারণা স্বাস্থ্য বিভাগের।