স্কুলে নিজের ঘর থেকে উদ্ধার হল শিক্ষকের দেহ। বুধবার, শিবরাত্রির দিন স্কুল বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল খোলার পর পড়ুয়ারা ওই শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় তাঁর ঘরে। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শিলিগুড়ির জলেশ্বরী বাজারের কাছে একটি বেসরকারি স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত শিক্ষকের নাম অভিজিৎ নাগ (৫১)। ওই স্কুলে কম্পিউটারের শিক্ষক ছিলেন তিনি। বাড়ি ধূপগুড়ির মাস্টারপাড়া এলাকায়। স্কুল সূত্রে খবর, প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার স্কুলে আসতেন অভিজিৎ। শুক্র-শনি কম্পিউটার ক্লাস করিয়ে ধূপগুড়ির বাড়িতে ফিরে যেতেন রবিবার। এ ভাবে কয়েক বছর ধরে ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে চলতি সপ্তাহে। বুধবার, শিবরাত্রির দিন প্রধানশিক্ষকের কাছ স্কুলের চাবি নিয়েছিলেন অভিজিৎ। জানিয়েছিলেন, তাঁর কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তা তিনি শেষ করতে চান। প্রধানশিক্ষক চাবিও দিয়েছিলেন। এর পর বৃহস্পতিবার সকালে পড়ুয়ারা স্কুলে এসে দেখে, স্কুল ভিতর থেকে বন্ধ। ঢুকতে না পেরে অন্যান্য শিক্ষককে বিষয়টি জানানো হয়। এর পর স্কুলের তালা ভেঙেই ভিতরে ঢোকানো হয় পড়ুয়াদের। তার পরেই উদ্ধার হয় অভিজিতের ঝুলন্ত দেহ।
স্কুলই খবর দেয় আশিগড় পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ এসে দেহ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে তারা যে সুইসাইড নোটটি উদ্ধার করেছে, তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’
স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জীবকুমার বোসের অবশ্য দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল অভিজিৎকে। প্রধানশিক্ষকের কথায়, ‘‘বুধবার উনি স্কুলের চাবি চেয়েছিলেন। এর পর বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল তালাবন্ধ দেখে অভিজিৎবাবুকে বার বার ফোন করা হয়। কিন্তু উনি ফোন তুলছিলেন না। এর পর তালা ভেঙে স্কুলে ঢোকানো হয় পড়ুয়াদের। আমি অভিজিৎবাবুর রুমে গিয়ে দেখি, শরীরটা সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। একটা সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটা পুলিশের কাছেই রয়েছে। তার স্ত্রীর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাঁরও মোবাইল বন্ধ।’’
শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা খতিয়ে দেখছি ঘটনাটি। তদন্ত করছে পুলিশ।’’