জমি হাঙরদের রেয়াত নয়, ভূমি কর্তাদের নির্দেশ জেলাশাসকের
বর্তমান | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: জমি হাঙরদের কোনওভাবেই রেয়াত করা যাবে না। কেউ সরকারি জমি দখল বা পুকুর ভরাটের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠক করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন জেলাশাসক আয়েশা রানি এ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে প্রতিটি ব্লকের বিএলএলআরওরা উপস্থিত ছিলেন। সব ব্লকের কাজের মূল্যায়ন করেন জেলাশাসক। কোন অফিসে কত ফাইল আটকে রয়েছে সেই তথ্য বৈঠকে তুলে ধরা হয়। তিনি বর্ধমান-১, ২ এবং ভাতারের বিএলএলআরওদের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁদের কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরে কাজের জন্য আসা আমজনতাকে কোনওভাবেই হয়রান করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। মিউটেশনের কাজ সাতদিনের বেশি আটকে রাখা যাবে না। এছাড়া অন্যান্য কাজও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। ভাতার, বর্ধমান-১ এবং বর্ধমান-২ ব্লকে বেশি ফাইল আটকে রয়েছে। কেন এতদিন ধরে ফাইল আটকে রয়েছে সেই কৈফয়তও চাওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পুকুর ভরাটের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও এধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা জলাশয় ভরাট করছে তাদের বিরুদ্ধ আইনি পদক্ষেপও নিতে হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। বর্ধমান-২ ব্লকে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ বারবার জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছে। এদিন সেই বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে। যে বা যারা খাসজমি দখল করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। কোন কোন এলাকায় সরকারি জমি দখল হয়ে রয়েছে তার তালিকা তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে জমি হাঙরদের একটি চক্র কাজ করছে। তারা সরকারি জমি দখলের পর প্লট করে বিক্রি করছে। সেই জমি নকল কাগজও তারা তৈরি করে দিচ্ছে। তা নিয়েও জেলা প্রশাসনের ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়ে। বর্ধমান শহর লাগোয়া এলাকায় জমি অগ্নিমূল্য হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে বর্ধমানের দু’টি ব্লকেই জমি হাঙররা সক্রিয় রয়েছে। সম্প্রতি জেলায় কয়েকটি পুকুর ভরাট করার অভিযোগ জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়ে। জেলাশাসকের নির্দেশে পুকুর ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভরাট হওয়া অংশ থেকে মাটি তুলে নেওয়া হয়। বর্ধমান শহরেও বেশ কয়েকটি পুকুর ভরাট আধিকারিকরা আটকেছেন। তারপরও জমি হাঙরদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। গোদা এলাকায় একটি জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ওই এলাকায় আধিকারিকরা অভিযান চালিয়েছিল। তারপরও একটি চক্র কৌশলে এই কাজ করে চলছে।