• সাত সকালেই শিব সেজে হাজির বহুরূপীর দল
    বর্তমান | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: কখনও সখনও বাড়ির দুয়ারে বাঘের হালুম বা হনুমানের হুপ হাপ শব্দ কানে আসে। কখনও আবার জয় শ্রীরাম ধ্বনিও শোনা যায়। তবে বৃহস্পতিবার বাড়ির দুয়ারে শোনা গেল ওঁ ধ্বনি। আর দরজা খুলতেই একেবারে স্বয়ং মহেশ্বর দর্শন। কয়েকদশক ধরে এভাবেই কান্দির বিভিন্ন গ্রামে আসছেন বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামের বহুরূপীরা। তাঁদের সংসার খরচ উঠছে এভাবেই। এদিন শতাধিক মহেশ্বর কান্দির বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেরিয়েছেন।


    কান্দি মহকুমা আদালত চত্বরের পাশেই রয়েছে চরণ রায়ের বাড়ি। এদিন সকালে বাড়ির কর্ত্রী সবেমাত্র শিবমন্দির থেকে পুজো দিয়ে ভিতরে ঢুকেছেন। এমন সময় দরজায় কড়া পড়ল। দরজা খুলতেই ওঁকার ধ্বনি। এরপর মহেশ্বর দর্শন। কর্ত্রী ঈষৎ হেসে ভিতর থেকে চাল ও পাঁচ টাকা নগদ এনে দিলেন। মহেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন বাড়ির সকলের জন্য।


    শুধু চরণবাবুর বাড়ি বলে নয়। এদিন কান্দি মহকুমার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেরিয়েছেন এমন শতাধিক মহেশ্বর। কারণ দিনটি ছিল শিবরাত্রির পর প্রথম সকাল। এঁরা সকলেই বহুরূপীর দল। কয়েক দশক ধরে এভাবেই কয়েকশো বহুরূপী কান্দি মহকুমার বিভিন্ন গ্রামে আসছেন। বীরভূমের লাভপুর থানার বিষয়পুর ও ভালকুঠি গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। তাঁরা কখনও রাম, কখনও বাঘ-ভাল্লুক বা হনুমান সেজে গ্রাম ঘোরেন। বাসিন্দাদের খুশি করে তোলেন সংসার খরচ। শিবসাজে বিষয়পুর গ্রামের তরুণ বাজিগর বলেন, কয়েকদশক ধরে আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় আড়াশো বাসিন্দা বহুরূপী সেজে কান্দি মহকুমার গ্রামগুলিতে আসছেন। প্রতিবেশী ভালকুঠি গ্রামেও অনেক বহুরপী এই এলাকায় আসেন। বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাজে আমরা বাসিন্দাদের খুশি করার চেষ্টা চালিয়ে যাই। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দার পেশাই হল বহুরূপী সাজা। এমনকী বাড়ির ছোটদেরও বহুরূপী সাজতে উৎসাহ দেওয়া হয়।


    কান্দিতে অপর বহুরূপী তারণ বাজিগর বলেন, বিভিন্ন তিথি দেখে আমরা সেই সাজে সেজে আসি। এদিন শিবরাত্রি ছিল বলে শতাধিক বহুরূপী শিব সেজে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছেন। কান্দি মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অরুণ কুমার দত্ত বলেন, কান্দি মহকুমায় হাতে গোনা দুই একজন বহুরূপী রয়েছেন। তবে বীরভূমের দু’টি গ্রাম থেকে কয়েকশো বহুরূপী কান্দির বিভিন্ন গ্রামে আসেন।
  • Link to this news (বর্তমান)