• সেনাকর্মীর পরিচয় দিয়ে সাইবার প্রতারণা, ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ৬০ হাজার
    বর্তমান | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: সেনা কর্মীর ভুয়ো পরিচয় দিয়ে অভিনব কায়দায় সাইবার প্রতারণা। ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গেল ৬০ হাজার টাকা। সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে,বালুরঘাট শহরের ডানলপ মোড় এলাকার ব্যবসায়ী সুমন সাহার কাছে ফোন আসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বালুরঘাট পুলিস লাইনে। সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কিছু ব্লাউজ ও চুড়িদার বানাতে হবে। সেই অর্ডার মতো ওই ব্যবসায়ী কাজ শুরু করতেই ওই আগন্তুক তাকে ফোন করে জানায় টাকা অনলাইনে দেবে। সেই মতো ব্যবসায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়ার পর সেনাকর্মীর পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি জানায় অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে না। এরপর ব্যবসায়ী এক পরিচিতর অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতেই ৬০ হাজার টাকা কেটে যায়। মাথায় হাত পড়ে ব্যবসায়ীর। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বালুরঘাট সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এমন ঘটনায় শহরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বালুরঘাট সাইবার ক্রাইম থানার আইসি সৌরভ ঘোষ বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিস তদন্ত শুরু করছে।


    প্রতারিত ব্যবসায়ী সুমন সাহা বলেন, কিছুদিন আগে সেনাবাহিনীর কর্মী পরিচয় দিয়ে একটি ফোন আসে। বালুরঘাট পুলিস লাইনে একটি অনুষ্ঠানের জন্য ৫০ টি ব্লাউজ ও চুড়িদার তৈরি করার বরাত দেন। প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে তিনি ভিডিও কল করে সেনার পোশাকে জয় হিন্দ বলেছিলেন। তাতে আমার বিশ্বাস হলে কাজ শুরু করি। অগ্রিম টাকা দেবেন বলে বুধবার ফোন করে আমার অ্যাকাউন্টের তথ্য নেন। আমাকে একটি নম্বর দেন। সেখানে ১০ টাকা পাঠিয়েছিলাম। পরে তিনি জানান পাল্টা টাকা পাঠালে তা ঢোকেনি। তখন এক পরিচিত ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিলাম। সেই অ্যাকাউন্টের তথ্য দেওয়ার পর মোবাইলে কিছু একটাতে ক্লিক করতে বলেন। তারপর ৬০ হাজার টাকা কেটে যায়। 


    বালুরঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হরেরাম সাহা বলেন, কোন ব্যবসায়ী কীসের ব্যবসা করেন, সেই তথ্য যদি সাইবার প্রতারকদের কাছে চলে যায়, তাহলে তো ভয়ানক বিষয়। এনিয়ে দ্রুত পুলিসের সঙ্গে বৈঠক করব। এখন দেখছি ব্যবসায়ীরা নিরাপদে নেই।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীর বিশ্বাস অর্জন করতে সেনার পোশাক পরে জয়হিন্দ বলেছিল ওই প্রতারক। ব্যবসায়ীও সরল মনে অ্যাকাউন্টের তথ্য দেন। সুমনের দাবি, তথ্য নিয়ে সাইবার প্রতারকরা হয়তো জানতে পারে আমার অ্যাকাউন্টে ১ হাজার ৯০০ টাকা আছে। প্রতারকরা বুঝে যায় এই অ্যাকাউন্ট থেকে বেশি টাকা সরানো যাবে না।  সেজন্য ফোন করে বলেছিল  অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে না। সেনাকর্মীর কথা শুনেই তড়িঘড়ি পরিচিত এক জনের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতেই প্রতারকরা টাকা সরিয়ে নেয়।


    তবে প্রশ্ন উঠছে, এই সুমন সাহা ব্লাউজের ব্যবসা করেন, সেই তথ্য সাইবার প্রতারকদের কাছে পৌঁছল কীভাবে। তবে কি জেলায় বসে সাইবার প্রতারকরা অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে? প্রশ্নটা অমূলক নয়। কারণ গত কয়েকমাসে পর পর এ ধরনের বড় অঙ্কের সাইবার প্রতারণার ঘটনার পর চিন্তা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)