পড়ুয়ারা ব্যস্ত কাজে, স্কুলে হাজিরা মাত্র ১০ শতাংশের, বাড়িতে গিয়ে অবাক রঘুনাথপুর স্কুলের শিক্ষকরা
বর্তমান | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: কেউ ব্যস্ত আবাসের নির্মাণে। অনেকে যুক্ত ইটভাটায় কাজে। গ্রামের একাংশ পড়ুয়া কাজে গিয়েছে ভিনরাজ্যে। মেয়েরা মাঠে ছাগল চড়ানো, ঝিনুক খুঁজতে ব্যস্ত। স্কুলে না আসা ছাত্রছাত্রীদের খোঁজে গ্রামে গিয়ে এমন সব দৃশ্য দেখে অবাক শিক্ষকরা। তাঁরা দেখলেন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণেই স্কুলে আসে না পড়ুয়ারা। তাই প্রতিদিনই কার্যত ফাঁকা থাকে বালুরঘাট শহর ঘেঁষা রঘুনাথপুর বিএম হাইস্কুল। স্কুলে সমস্ত পরিকাঠামো থাকতেও আসে না পড়ুয়ারা। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ওই স্কুলে ১৬০ জন পড়ুয়া। কিন্তু নিয়মিত আসে ১৫-২৫ জন পড়ুয়া। নানা কারণে ছাত্রের অভাবে ধুঁকছে ওই স্কুল।
স্কুল সূত্রে খবর, বালুরঘাট শহর লাগোয়া ডাঙ্গা, বিজশ্রী, নামাডাঙ্গা, পরানপুর সহ গ্রাম থেকে পড়ুয়ারা ওই স্কুলে আসে। সবই আধিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। স্কুলের শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝানোর পরও পড়ুয়ারা নিয়মিত আসে না। অনেকে শিক্ষকদের দেখলেই দৌড়ে পালাচ্ছে। অভিভাবকদের মধ্যেও ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠানোয় অনীহা। কেউ শিক্ষকদের কথা শুনে জোর করে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠালেও তারা মাঠে গিয়ে কাজ করছে, এমনও দৃশ্য উঠে এসেছে। অভিভাবক বিজয় মুর্মুর কথায়, ছেলেমেয়েকে বারবার বলি স্কুলে যেতে। কিন্তু ওরা যেতে চায় না। শিক্ষকরা এসে বোঝালেও কাজ হচ্ছে না। এবিষয়ে রঘুনাথপুর বিএম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্নেহাশিস তপস্বী বলেন,
স্কুলে কম্পিউটার, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি সহ নানা পরিকাঠামো রয়েছে। পড়ুয়াদের নাচ, গান, আবৃত্তি শেখানো হয়। আমরা এরপরও দেখা যাচ্ছে একটা অংশ স্কুলমুখী হচ্ছে না। আমরা বারবার ওই গ্রামগুলিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বোঝাচ্ছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কেউ বাবা, মায়ের সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করছে। অনেকে আবার অন্য কাজে যুক্ত হচ্ছে। এনিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবুও পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) দেবাশিস সমাদ্দারের কথায়, পড়ুয়ারা যাতে স্কুলমুখী হয়, তার জন্য বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। আমি ওই স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব। - নিজস্ব চিত্র